1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

তিন মাস না যেতেই আসল চেহারা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ বার দেখা হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ঢাকা

 

৫ আগস্টের বিপ্লবের তিন মাস না যেতেই আসল চেহারা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত কয়েক দিনে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও হানাহানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘এই চেহারা নিয়ে কোনো দিনই সাফল্য অর্জন করা যায় না, যতই বড় বড় কথা বলি, যতই লম্বা লম্বা বক্তৃতা করি। নিজের ঘরেই যদি বিভেদ থেকে যায়, আমরা সেটা কখনোই ঠিক করতে পারব না।’

নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর লড়াই করেছে, প্রাণ দিয়েছে, কারাগারে গেছে, নির্যাতিত হয়েছে। সেই মানুষগুলো ২০২৪-এর ৫ আগস্ট আরেকটি বিজয় অর্জন করেছে। সেই বিজয় অর্জন হয়েছে রাজপথে অনেক রক্তের মধ্য দিয়ে, অনেক প্রাণের ভেতর দিয়ে। কিন্তু তার ফল কি এই বাংলাদেশ? তিন মাস হয়নি, এখনই রাস্তায় রাস্তায় লড়াই শুরু হয়েছে। একজন আরেকজনের বুকের রক্ত ঝরাচ্ছি। এখন পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আক্রমণ করছে।’

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এই কয়টা দিনে আমরা খুব চিন্তিত, উদ্বিগ্ন, ভয়াবহভাবে উদ্বিগ্ন। আপনি চিন্তা করতে পারেন, ধর্মকে কেন্দ্র করে কী উন্মাদনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে! আপনি চিন্তা করতে পারেন, যে মুক্ত স্বাধীন মিডিয়ার জন্য আমরা এত দিন লড়াই করলাম, তার অফিস পুড়িয়ে দিচ্ছে! এই বাংলাদেশ তো আমরা দেখতে চাই না, আমি অন্তত চাই না।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কী উন্মাদনা! কিছুসংখ্যক মানুষ আছেন…আপনাদের সোশ্যাল মিডিয়া আমি দেখি না সহজে। কিন্তু যখন দেখি, আতঙ্কিত হই। পুড়িয়ে দাও জ্বালিয়ে দাও—এ ধরনের কথাবার্তা। চিন্তা করতে পারেন, কোন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে। আমরা কি বুঝি আমাদের ভয়টা কোথায়, আতঙ্কটা কোথায়? আমরা কি বুঝি আততায়ী কোথায় ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আমাদের পেছনে। বুঝি না, বুঝলে এ ধরনের দায়িত্বহীন কথাবার্তা আমাদের মুখ দিয়ে বের হতো না।’

হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, কিছুসংখ্যক মানুষ—তাঁরা নিজেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় সবচেয়ে দেশপ্রেমিক মনে করেন, আর গোটা জাতিকে আজকে তারা বিভাজনের দিকে উসকে দিয়ে একটা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।’ কারও নাম উল্লেখ না করে বিএনপি মহাসচিব উপস্থিত চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা গভীরভাবে চিন্তা করবেন, আমি কারও নাম বলব না। কারও নাম বলতে চাই না। আপনারা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন যে যারা আজকে দেশকে বিভাজনের দিকে ঠেলছে, অনৈক্যের দিকে ঠেলছে, তারা আমাদের আসলে শত্রু না মিত্র। এ জিনিসগুলো বুঝতে হবে। আমি কথাগুলো ইচ্ছে করেই আজকে তুলে ধরলাম।’

’৯০ এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
’৯০ এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরছবি: সংগৃহীত
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা ঘিরে সাম্প্রতিক ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি তীব্রভাবে নিন্দা জানাচ্ছি প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ অন্যান্য সব পত্রিকার ওপর যে আক্রমণ শুরু হয়েছে। আমি তীব্র নিন্দা জানাই তার। কারণ আমি সারা জীবন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি। এটা আমার বিশ্বাস, আস্থা।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মানেটা কী, যে আপনি আপনার কথা বলবেন। আপনার সঙ্গে আমি একমত হতে না-ও পারি। কিন্তু আপনার মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আমি আমার জীবন দিয়ে রক্ষা করব—এটাই গণতন্ত্র।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকা বন্ধ করার দাবি ও পত্রিকা দুটির প্রধান কার্যালয়ের ফটক ঘিরে বিক্ষোভের দিকে ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি এক ফ্যাসিস্টকে উৎখাত করেছেন। কারণ, সে আপনার গলা টিপে ধরেছিল, সে আমাদের মেরে ফেলছিল, কথা বলতে দিত না, ভোট দিতে দিত না, হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে। আবার এখন আরেকটা…একে বলতে দেওয়া যাবে না, একে নিশ্চিহ্ন করো, হাউ ডু ইউ জাস্টিফায়েড। আপনারা বলেন, এভাবে একটা সমাজ এগোতে পারে?’

সমাজের অত্যন্ত শিক্ষিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মুখ দিয়ে এসব কথা শুনতে হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে, সে এদিকে যাবে না ওদিকে যাবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি ১৪-১৫ বছর ধরে লড়াই করেছি, বহুবার জেলে গেছি, যেকোনো সময় আবারও জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমি এই বাংলাদেশ দেখতে চাই না। আমি যা বিশ্বাস করি, আমার দল যা বিশ্বাস করে, আমি সেই কথা আমার প্রাণ গেলেও আমি বলব। আমি বিশ্বাস করি, উদারপন্থী গণতন্ত্রে, বিশ্বাস করি বাক্‌স্বাধীনতায়, ভোটের স্বাধীনতায়। আমি জানি, অনেকে অনেক কিছু বলেন, কিন্তু আমি এতটুকুও চিন্তা করি না। কারণ, আমরা রাস্তায় থেকে লড়ে লড়ে এই জায়গায় এসেছি। সময়–সুবিধামতো পালিয়ে যাই না আমরা, সামনেই দাঁড়াই।’

সমাজে ঘৃণা ও বিভাজন দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। উপস্থিত চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা এই সমাজের শ্রেষ্ঠ লোকগুলো বসে আছেন। ছাত্রজীবনে আপনারা শ্রেষ্ঠ ছিলেন, কর্মজীবনেও শ্রেষ্ঠ। তাই আপনাদের সামনে এই প্রশ্নটা তুলছি। আর কত এই বিভাজন নিয়ে, আর কত ঘৃণা নিয়ে অমরা বাংলাদেশকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা করব। বারবার টেনে তোলা হবে, আবার পড়বে ঘৃণা নিয়ে। দানবীয় শক্তি দিয়ে আবার উঠবে, আবার পড়বে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি এই কথাটা আজকে এ জন্যই বলছি, ডা. মিলন যে প্রাণ দিয়েছেন। এখানে আমরা সবাই তাঁর অনেক গুণগান করলাম। আমাদের কী দুর্ভাগ্য, কী ব্যর্থতা—আমরা মিলনের সেই আত্মত্যাগ সত্যিকার অর্থে বাস্তবে রূপ দিতে পারিনি। তাঁরা ১৯৯০ সালে প্রাণ দিয়েছিলেন ভোটের অধিকারের জন্য, স্বৈরাচার দূর করার জন্য। আর আজকে এই ২০২৪ সালে ভোটের অধিকারের জন্য যুদ্ধ করতে হয়েছে। এ কোন জাতি আমরা। এবার যে সুযোগ হয়েছিল সবাই মিলে একসঙ্গে একজোটে একটা পরিবর্তন নিয়ে আসার। ছেলেরাও ছিল, আমরাও ছিলাম।’

আক্ষেপ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘তিনটা মাস হয়নি এখনো, এর মধ্যে আমাদের আসল চেহারা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এই চেহারা নিয়ে কোনো দিনই সাফল্য অর্জন করা যায় না—যতই বড় বড় কথা বলি, যতই লম্বা লম্বা বক্তৃতা করি।’

তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচনের পথে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে যাঁরা সরকারের (উপদেষ্টা) দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের এমন কোনো কথা না বলার অনুরোধ করেছেন, যাতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।

ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান ও ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সাবেক সভাপতি এ কে এম আজিজুল হক প্রমুখ।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com