রাজনীতি ডেস্কঃ
ঢাকা: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ – বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আয়োজন করে। এটি ছিল দলটির ৫ দফা দাবি, বিশেষত নভেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠানের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে।
বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যা পরে একটি পদযাত্রা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের দিকে চলে যায়। সমাবেশের শেষের দিকে জামায়াতে ইসলামী নেতারা নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান নেন এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বিএনপি-জামায়াত জোটের অন্যতম সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমসহ দলের শীর্ষ নেতারা এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাগপা এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি বিভিন্ন মিছিল নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান নেয়। দলগুলোর প্রতিনিধিরা পরে নির্বাচন কমিশনের ভেতরে প্রবেশ করেন।
এ কর্মসূচি ছিল জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নভেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠিত করার দাবিতে একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। জামায়াতের দাবি, সরকারের কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে ন্যূনতম পাঁচটি প্রধান দাবি পূরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে, জাতীয় নির্বাচন, সুষ্ঠু ভোটাধিকার প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম স্মারকলিপি প্রদানকালে জানান, দেশের জনগণের আস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি গুরুত্ব দেন। তিনি আরও বলেন, জনগণের দাবি পূরণ না হলে তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, নির্বাচনী ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জনগণের অধিকারের প্রতি জামায়াতের এই আন্দোলন বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলটির দাবি, জনগণের মুক্তি এবং জনগণের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য এই গণভোট প্রয়োজনীয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, যা অতীতে বেশ কিছু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, বর্তমানে ভোটাধিকার ও নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি জনগণের বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির এই দাবি শুধু নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদানের পর, জামায়াতে ইসলামী নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, “গণভোটের মাধ্যমে দেশের জনগণের মতামত শোনা জরুরি, এবং এটি সরকারের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ।”
এটি জামায়াতে ইসলামী ও তার জোটসঙ্গীদের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি চাপে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের আন্দোলন বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়।
এই ধরনের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং আন্দোলনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক দাবিগুলি সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে, যা আগামী দিনে আরো উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।