রাজনীতি ডেস্ক

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের একক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার শেষ ধাপে পৌঁছেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে।

বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত আছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে একক প্রার্থী তালিকা যাচাই-বাছাই ও আলোচনার পর প্রথম দফায় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি সূত্রে আরও জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। আসনভিত্তিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রতিটি প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, সংগঠনের প্রতি আনুগত্য, আন্দোলনকালীন ভূমিকা এবং স্থানীয় পর্যায়ের মতামত বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

এর আগে রোববার (২ নভেম্বর) লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানান, “জনগণের বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গণতন্ত্রকামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। দেশের ৩০০ আসনে বিএনপি দলীয় বা সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি একটি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করছে, যাতে প্রতিটি আসনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা যায়।”

দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, প্রার্থী নির্বাচনে শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা নয়, বরং আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং দলের প্রতি দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও আনুগত্যকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা বিগত বছরগুলোতে দমন-নিপীড়নের মধ্যেও সংগঠনের পাশে থেকেছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপি নেতারা আরও জানান, আসনভিত্তিক মাঠপর্যায়ের সমীক্ষা, স্থানীয় কমিটি ও জেলা নেতাদের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচনে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী কাঠামো গঠনের লক্ষ্য নিয়েছে দলটি।

দলীয় সূত্র বলছে, একক প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরপরই নির্বাচনী প্রচার কৌশল, গণসংযোগ পরিকল্পনা ও প্রচার সামগ্রী প্রস্তুতের কাজ শুরু হবে। বিএনপি মনে করছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া এবং জাতীয় রাজনীতিতে নতুন গতি সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে।

বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, দলের নেতৃত্ব স্থানীয় পর্যায়ের ঐক্য ও শৃঙ্খলা রক্ষাকে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা আশা করছেন, একক প্রার্থী ঘোষণা দলের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি রোধ করবে এবং জাতীয় নির্বাচনে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করবে।