রাজনীতি ডেস্ক
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংসদে যাওয়ার বিষয়টি মূলত বিএনপির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। তিনি মনে করেন, বিএনপির সঙ্গে এনসিপির বর্তমান সম্পর্ক এবং পারস্পরিক অবস্থানই ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে কোনো সমঝোতা বা সমন্বয় ঘটবে কিনা, তা নির্ধারণ করবে।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নুরুল হক নুর বলেন, “এনসিপির অনেক ক্ষেত্রেই এমপি হওয়া বা সংসদে যাওয়াটা বিএনপির ওপর নির্ভর করবে। বিএনপির নেতাদের নিয়ে এনসিপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে যে অসম্মানজনক ও তীর্যক মন্তব্য করা হয়েছে, তা দুই দলের সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে। এখনো নিশ্চিত নই, শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে কী ধরনের সমঝোতা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “একদিকে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার জন্য এনসিপির নেতারা বিভিন্ন সময় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, ব্যক্তিগত সম্পর্ক বজায় রাখছেন। আবার অন্যদিকে গণমাধ্যমে নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।”
জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠন না করার বিষয়ে নুর বলেন, প্রকৃত অর্থে কোনো নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে সংস্কার কমিশনের আলোচনার অংশ হিসেবে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা মাঝে মাঝে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে নির্বাচনে সম্ভাব্য অবস্থান ও কৌশল নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম যাতে বুঝতে পারি, কে কোন অবস্থান নিচ্ছে এবং বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব কি না। কারণ, বিএনপি এখানে একটি বড় রাজনৈতিক স্টেকহোল্ডার।”
নির্বাচন নিয়ে তাঁর মন্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন, “নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে, আর তফসিল ঘোষণা করা হবে ডিসেম্বর মাসে। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে—এ বিষয়ে প্রায় সব দলেরই অভিন্ন মত রয়েছে। তাই এসব নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গণ অধিকার পরিষদের এই বক্তব্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী রাজনৈতিক জোটের সম্ভাব্য বিন্যাসে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এনসিপি, বিএনপি এবং গণ অধিকার পরিষদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও অবস্থান আগামী রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।