রাজনীতি ডেস্ক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আন্দোলন ও রাজনৈতিক সহযোগিতায় থাকা সমমনা দলগুলোর জন্য অবশিষ্ট ৬৩টি আসন আপাতত ফাঁকা রাখা হয়েছে। একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকা কিছু আসনেও প্রার্থী ঘোষণা স্থগিত রয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। ঘোষণার পর এক বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে দলের সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, বর্তমানে ৬৩টি আসন ‘অন হোল্ড’ রয়েছে। তার নির্বাচনী আসনটিও এই তালিকায় রয়েছে। তিনি জানান, “দল এখন ‘উইনেবল’ প্রার্থী খুঁজে দেখছে। সেই বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, বিএনপির মহাসচিব স্পষ্ট করেছেন যে ঘোষিত তালিকাটি সম্ভাব্য তালিকা, যা পরিবর্তনযোগ্য। “কেউ বাদ পড়তে পারেন, আবার নতুন কেউ যুক্তও হতে পারেন,” উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জানান, বিগত ১২ থেকে ১৫ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির সঙ্গে থাকা সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা চলছে। সেই কারণেই ৬৩টি আসন এখনো ঘোষণা করা হয়নি। একই সঙ্গে নবগঠিত বা নতুনভাবে যুক্ত হতে চাওয়া কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে কিছু এলাকায় নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সম্পর্কে রুমিন ফারহানা বলেন, দলের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের এই আবেগকে সম্মান করতে হবে। তিনি বলেন, “যারা মাঠে ছিলেন, তাদের ভালোবাসা, শ্রম, ত্যাগ ও ঘামেই আমরা এত দূর এসেছি। তাই তাদের হতাশা বা ক্ষোভকে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।”
নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, “যদি দল নারী প্রার্থীদের জন্য মনোনয়ন কোটা ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে রাজি হয়, তাহলে চূড়ান্ত তালিকায় আরও নারী যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি আসন্ন নির্বাচনে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোটগত কৌশল বজায় রেখে প্রার্থী বাছাই করছে। এতে জোটের ঐক্য সংহত রাখা ও নির্বাচনে সমন্বিত প্রতিদ্বন্দ্বিতার কৌশলই প্রাধান্য পাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির ঘোষিত আংশিক প্রার্থী তালিকা দলীয় কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হতে পারে, যার মাধ্যমে জোটের ভারসাম্য রক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে দল এখনো চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি, যা পরবর্তী কয়েক দিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এই ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপি কার্যত নির্বাচনী প্রস্তুতির পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করল, যেখানে প্রার্থী বাছাই, আসন ভাগাভাগি এবং মাঠপর্যায়ের প্রচার কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।