রাজনীতি ডেস্ক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দলটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কোনো জোটে যাচ্ছে না, তবে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা করতে পারে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত কোনো জোট করার সিদ্ধান্ত নিইনি, এবং জোট করবোও না। তবে নির্বাচনে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন না হলে দেশে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমরা সবাইকে নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আদায় করে নেবো।” এ সময় গণভোট বিষয়ে জামায়াতের পূর্বের অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
জামায়াত সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় মেয়াদে আমির নির্বাচিত হওয়ার পর এটি ডা. শফিকুর রহমানের প্রথম সাংগঠনিক সফর। এই সফরের অংশ হিসেবে তিনি বুধবার সকালে সিলেটে পৌঁছান। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
দলের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, সফরকালে তিনি সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকে অংশ নেবেন। এসব বৈঠকে দলীয় কার্যক্রমের অগ্রগতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি, এবং নির্বাচনি কৌশল বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
জামায়াতের নেতৃত্বপূর্ব একটি ধারা অনুসারে, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের পর সাংগঠনিক সফরের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দলীয় কর্মকাণ্ড সক্রিয় করা হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, ডা. শফিকুর রহমানের এই সফরকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের কৌশল নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের বক্তব্য ও কার্যক্রমে যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তা তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্নির্ধারণের প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে। যদিও দলটি এখনও নিবন্ধনবিহীন, তবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামীর অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। দলীয় সূত্রমতে, সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন এবং মাঠপর্যায়ে সমর্থন বাড়ানোর প্রচেষ্টা বর্তমানে চলমান।
ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে জামায়াত এখন নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণের দিকে অগ্রসর হচ্ছে কি না—সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না এলেও দলীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার এই ইঙ্গিত ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।