রাজনীতি ডেস্ক:
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি সময় হলে পদত্যাগ করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল সংক্রান্ত মামলার আপিল শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আসাদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কাছে তিনি মনোনয়ন চেয়েছেন এবং এ বিষয়ে আশাবাদী যে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন। তিনি বলেন, “যখন সময় হবে, তখন পদত্যাগ করে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেব।”
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি ওই আসনটি তার জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছে।
এর আগে গত সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। পরের দিন একটি আসনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়। ওইদিন ঝিনাইদহ জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে শুধুমাত্র ঝিনাইদহ-৩ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়; বাকি তিনটি আসনে কোনো নাম ঘোষণা করা হয়নি।
দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ঝিনাইদহ-১ আসন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের জন্য এবং ঝিনাইদহ-২ আসন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খানের জন্য রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
এই ঘোষণার মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল একটি সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত, যিনি সরকারের প্রধান আইন উপদেষ্টা ও সর্বোচ্চ আদালতে সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। পদত্যাগের পর তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পারবেন বলে আইনি বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকারের অধীনে দায়িত্বে থাকা একজন উচ্চপদস্থ আইন কর্মকর্তার নির্বাচন করার ঘোষণা একটি তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। এটি শুধু আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটেই নয়, প্রশাসনিক কাঠামোতেও আলোচনার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দল সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত করতে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিএনপি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আসনে জোটভিত্তিক সমন্বয়ের বিষয়েও আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।