1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

ঢাকা-১৪ আসনে ভোটযুদ্ধে ‘ভাই-বোন’ প্রার্থী: মানবিক বার্তা দিচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৪ বার দেখা হয়েছে

রাজনীতি ডেস্ক ডেস্ক

রাজধানীর ঢাকা-১৪ আসনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছেন দুই ব্যতিক্রমী প্রার্থী—একজন নিজে গুমের শিকার ছিলেন, অন্যজন গুমের শিকার এক নেতার বোন। তারা দুই শীর্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনি প্রচারণায় দুজনেই একে অন্যকে ‘ভাই’ ও ‘বোন’ হিসেবে সম্বোধন করছেন, যা ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ঢাকা-১৪ আসন গঠিত হয়েছে রাজধানীর দারুস সালাম, শাহ আলী ও মিরপুর থানার আংশিক এলাকা এবং সাভারের কাউন্দিয়া ও বনগাঁও ইউনিয়ন নিয়ে। প্রায় সাড়ে চার লাখ ভোটারের এ আসনে বর্তমানে প্রচারণা চলছে বেশ জমজমাটভাবে।

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম (আরমান) আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুমের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি আট বছর নিখোঁজ থাকার পর চলতি বছরের ৫ আগস্ট মুক্ত হন। এরপর জামায়াত আমিরের আহ্বানে তিনি ঢাকা-১৪ আসনে মনোনয়ন নেন।
আরমানের বাবা ছিলেন জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলী। তিনি জামায়াতের আর্থিক কৌশলগত পরামর্শক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যুক্তরাজ্যে আইন পেশায় যুক্ত থাকা আরমান দেশে ফিরে বাবার মামলায় আইনি লড়াইয়ে অংশ নিতে গিয়ে গুমের শিকার হন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।

নির্বাচনি এলাকায় আরমানের প্রচারণা বেশ প্রাণবন্ত। কাউন্দিয়া, বনগাঁও এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে তার প্রচারণা। মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, মিছিল ও জনসংযোগ কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

প্রচারণায় তিনি এলাকার মূল সমস্যাগুলোর কথা তুলে ধরে বলেন, মাদক তরুণ সমাজের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন তিনি। এছাড়া কাউন্দিয়া ও বনগাঁও ইউনিয়নের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়ন, শিক্ষার প্রসার ও সুলভ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেন।

বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন গুমের শিকার দলের এক নেতা সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি। তিনি এর আগে মানবাধিকার ও গুমবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদি আমিনের সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে তাকে।

তুলি বলেন, “১২ বছর আন্দোলনের পর আমরা কিছু নিখোঁজ মানুষকে ফিরে পেয়েছি। আরমান ভাইও তাদের একজন। কিন্তু আমার ভাইসহ অনেককে এখনো পাইনি। তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমাকে মাঠে থাকতে হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। আমি এলাকাবাসীর সমস্যা শুনছি এবং সেগুলোর সমাধানকে ম্যানিফেস্টোতে অন্তর্ভুক্ত করছি।”

প্রচারণায় দুই প্রার্থীই একে অন্যের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছেন। জামায়াত প্রার্থী আরমান সানজিদা ইসলাম তুলিকে ‘আমার বোন’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “তুলির বক্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মানবিক ও নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির উদাহরণ হয়ে থাকবে।”

স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে এই ভিন্নধর্মী আচরণ প্রশংসা কুড়িয়েছে। মিরপুরের বাসিন্দা মাহমুদ হাসান বলেন, “দুজনই গুমের শিকার পরিবারের সদস্য। তারা রাজনীতিতে মানবিকতা ফিরিয়ে আনছেন। তাদের এমন সৌহার্দ্য রাজনীতির নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করবে।”
কল্যাণপুরের বাসিন্দা মাইনুল হোসেনের মতে, “দল দুটি এবার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রার্থীরা নীতিনিষ্ঠ ও শিক্ষিত। ভোটে যারা জিতবেন, তারা এলাকার সমস্যাগুলো সমাধান করবেন বলে আশা করি।”

২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার ২১৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৯, নারী ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ৭৪৪ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার চারজন। হালনাগাদে এ সংখ্যা কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পালাক্রমে আধিপত্য বজায় রেখেছে। আওয়ামী লীগের প্রয়াত আসলামুল হক এবং বিএনপির প্রয়াত এমপি এসএ খালেক এই আসনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পূর্বে। এবার নতুন প্রজন্মের দুই প্রার্থী—মীর আহমদ বিন কাসেম ও সানজিদা ইসলাম তুলির অংশগ্রহণে আসনটি রাজনৈতিকভাবে বিশেষ নজর কাড়ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এ আসনের নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। গুম, মানবাধিকার ও নাগরিক ন্যায়ের প্রশ্নে দুই প্রার্থীর অভিন্ন অবস্থান এ আসনটিকে জাতীয় রাজনীতিতে এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে পারে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com