রাজনীতি ডেস্ক
আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের অনুরোধে অনশন কর্মসূচি ভেঙেছেন। রোববার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মূল ফটকের সামনে সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত হয়ে তারেক রহমানকে স্যালাইন পান করিয়ে অনশন ভাঙান।
সালাহউদ্দিন আহমেদ এ সময় বলেন, আগামীকাল (সোমবার) নির্বাচন কমিশনে আপিল দাখিল করা হবে এবং দলের কয়েকটি দপ্তরের কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা হবে। তিনি তারেক রহমানকে আশ্বস্ত করে জানান, আমজনতার দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর উপস্থিত সহকর্মীরা তারেক রহমানকে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান।
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল থেকে তারেক রহমান আমজনতার দলের নিবন্ধন না পাওয়ায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের মূল ফটকের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তার দল নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করলেও নির্বাচন কমিশন তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেনি।
তারেক রহমানের দাবি, দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কার্যক্রম, কার্যালয় এবং সাংগঠনিক কাঠামো থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে কার্যক্রম না পাওয়ার অজুহাত দেখানো হয়েছে। নিবন্ধন না দেওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
অনশন চলাকালে তারেক রহমানের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে স্যালাইন দেওয়া হয়। তবে তিনি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার অবস্থান বজায় রাখেন।
এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অনশনস্থলে এসে তার প্রতি সংহতি জানান এবং তার দাবিকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও একাধিকবার অনশনস্থলে এসে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন, তবে তিনি তার অবস্থান থেকে সরেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। কমিশনের পক্ষ থেকে আমজনতার দলের আবেদন পুনর্বিবেচনা করা হলে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও আস্থার প্রশ্নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, আমজনতার দলের নেতৃত্বের দাবি—তাদের দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও প্রশাসনিক জটিলতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বৈষম্যের শিকার হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা যায়, নিবন্ধনের জন্য জমা পড়া আবেদনগুলোর মধ্যে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে আপিলের সুযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সালাহউদ্দিন আহমেদের মধ্যস্থতায় অনশন ভাঙার মাধ্যমে আলোচনার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশন এবং আমজনতার দলের মধ্যে সংলাপ ও আপিল প্রক্রিয়ার ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে দলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান।