রাজনীতি ডেস্ক: রাজধানীর পল্টনে মঙ্গলবার পাঁচ দফা দাবিতে সমাবেশে জড়ো হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে দলগুলো নভেম্বর মাসে গণভোট আয়োজন এবং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানায়। এই সমাবেশের কারণে পল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর পল্টনে শুরু হওয়া এই সমাবেশে অংশ নিচ্ছে মোট আটটি রাজনৈতিক দল, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি।
এই দলগুলোর পাঁচ দফা দাবির মধ্যে প্রধান দাবিগুলো হচ্ছে—
১. জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ জারি
২. নভেম্বর মাসেই গণভোট আয়োজন
৩. নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা
দলগুলোর নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে পল্টনে এসে জড়ো হচ্ছেন। সমাবেশের জন্য পল্টন, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড়সহ আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে এবং কোনো যানবাহন পল্টন মোড়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তারা জানান, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি বড় বাহিনী পল্টন এবং আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে এবং যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রস্তুত রয়েছে।
সমাবেশে দলগুলোর নেতারা দাবি করছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য তাদের এসব দাবির বাস্তবায়ন অপরিহার্য। তারা বলেন, নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দেওয়া উচিত এবং জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানো প্রয়োজন।
নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অর্থাৎ সকল দলের জন্য সমান সুযোগের পরিবেশ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি। দলগুলো মনে করে যে, নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও অবাধ পরিবেশ তৈরি করা না হলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
এছাড়া, গণভোট আয়োজনের দাবিও উঠে এসেছে। দলগুলোর দাবি, জনগণের মতামত ছাড়া কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তারা জানায়, গণভোটের মাধ্যমে সরকারের অগ্রাধিকার এবং নির্বাচনের পদ্ধতি জনগণের সম্মতিতে নির্ধারণ করা উচিত।
সমাবেশের মধ্য দিয়ে দলগুলো একটি বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং আগামী নির্বাচনে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চাইছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলগুলোর নেতারা বলেন, ‘‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি অনিশ্চিত পথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আর তাই জনগণের স্বার্থে তাদের দাবির বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।’’
এদিকে, সমাবেশের পরবর্তী সময়ে দলগুলোর নেতারা জানান, তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলবে এবং কোনো ধরনের সহিংসতা তারা সমর্থন করেন না। তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার তাদের দাবিগুলোর প্রতি সাড়া দেবে এবং দেশের জনগণের সমর্থনকে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেবে।
সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা পল্টনে আসছেন এবং স্লোগান দিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছাচ্ছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কঠোরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং কোনো বিশৃঙ্খলা এড়ানোর জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
এছাড়া, সমাবেশের কারণে রাজধানীর যানজট পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা রয়েছে। যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা ধরনের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
এসময়ের মধ্যে, ডিএমপি সূত্রে জানানো হয়েছে যে, যদি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তবে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।