রাজনীতি ডেস্ক
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দলের স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত ১০ নভেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য দলের পক্ষ থেকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি সতর্ক করে জানান, যদি সরকার সনদের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সনদে স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না এবং সরকারই দায়ী থাকবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যদি সরকার জুলাই সনদ থেকে বিচ্যুত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা বাস্তবায়নকারী রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সেই ক্ষেত্রে দায়ভার পুরোপুরি সরকারের ওপর পড়বে।” তিনি আরও বলেন, “যদিও সনদে স্বাক্ষরকারী দলগুলোর মধ্যে কিছু লোক বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছে, তবে আমরা তাদের সতর্ক করছি যে সনদ অগ্রাহ্য করা হবে না।”
ড. মোশাররফ হোসেন আরো জানান, ১০ নভেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানোর পরই জুলাই সনদে স্বাক্ষর হয়েছিল, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়েছিল।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “কিছু উপদেষ্টা এবং সরকারী মুখপাত্ররা সনদ থেকে বিচ্যুত হতে চেষ্টা করছেন, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আমরা সরকারকে বারবার সতর্ক করছি যে, তারা যদি সনদ থেকে সরে আসে, তবে সরকারই দায়ী থাকবে।”
এছাড়া, বিএনপির এই নেতা নির্বাচন ঘিরে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু মহল ষড়যন্ত্র করছে। যারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না, তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।” তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সরকারকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে।”
ড. মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে কোনো বিতর্কের সুযোগ নেই। এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সকল রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়েছে। যদি সরকার কোনো পক্ষ থেকে অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
এ প্রসঙ্গে, তিনি সরকারের প্রতি আরও একটি তীব্র অভিযোগ করেন, “গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সরকারের উচিত সকল রাজনৈতিক দলের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, কিন্তু যে দলগুলো এতে অংশ নিতে পারছে না তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।”
এদিকে, বিএনপি নেতারা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসময় আরও উল্লেখ করেন যে, নির্বাচনে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে, এবং সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তা দেশের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এছাড়া, তিনি সরকারের প্রতি আরও একবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সরকার যেন অবিলম্বে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে এবং কোনো ধরনের বিভ্রান্তি বা অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকে।”