জাতীয় ডেস্ক:
গণঅভ্যুত্থানে শহিদ মীর মুগ্ধের ভাই এবং বিএনপি নেতা মীর মাহাবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, যতদিন পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে, ততদিন তার মুখ থেকে “শেখ শেখ” শব্দ উচ্চারিত হবে। এই মন্তব্যটি তিনি গত সোমবার (১০ নভেম্বর) নাটোরে বিএনপির এক মতবিনিময় সভায় দেন। স্নিগ্ধের এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং তার বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
গত সোমবার নাটোরে বিএনপির মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় স্নিগ্ধ ভুলবশত “শেখ” শব্দ উচ্চারণ করেন, যা সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই মন্তব্য করেন, স্নিগ্ধ সম্ভবত খালেদা জিয়ার নাম বলতে গিয়ে ভুলক্রমে শেখ হাসিনার নাম উচ্চারণ করেছেন। তার এই ভুলে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন স্নিগ্ধ। তিনি লেখেন, “যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে দেশের মাটিতে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই নাম কখনও না কখনও মুখ থেকে বের হবেই।” স্নিগ্ধ আরো বলেন, “এই নাম শুধু আমার জন্য নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্যও ঘৃণিত, যারা বিগত ১৬ বছর ধরে অত্যাচারিত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার নাম উচ্চারণ কেবল ঘৃণার প্রতিফলন। যতবার এ নাম মুখে আসে, ততবার তা ঘৃণার প্রতীক হয়ে থাকবে।” তার এই বক্তব্যে তিনি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে যতদিন ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো না হবে, ততদিন দেশের শান্তি আসবে না।
মীর মাহাবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ মীর মুগ্ধের ভাই, সম্প্রতি বিএনপিতে যোগদান করেছেন। তিনি দলটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। স্নিগ্ধের এই মন্তব্য বিএনপি এবং তার সমর্থকদের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। তার বক্তব্যের মধ্যে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এবং স্বৈরাচারী হিসেবে চিত্রিত করার প্রয়াস দেখা যায়, যা বিএনপির সমালোচনা এবং আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্নিগ্ধের মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায়। সমর্থকরা তার বক্তব্যকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এবং দেশের জনগণের অধিকার আদায়ের স্বীকৃতি হিসেবে দেখতে পারেন, আবার সমালোচকরা এটি অত্যন্ত চরম ভাষা এবং সহিংসতার উসকানি হিসেবেও মূল্যায়ন করছেন। তার এই ধরনের ভাষা প্রয়োগ রাজনৈতিক পরিসরে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এটি বিএনপির ঐতিহাসিক অবস্থান এবং তাদের সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধিতার এক নতুন দিক হতে পারে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে এক সুস্পষ্ট রাজনৈতিক আক্রমণের রূপ নিয়ে। স্নিগ্ধের বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে তার নিজের এবং দলের জন্য নতুন সংকট তৈরি করতে পারে, যদিও এটি বিএনপির সাধারণ কর্মী এবং সমর্থকদের কাছে আরও জনপ্রিয়তা লাভের একটি উপায় হিসেবেও দেখা যেতে পারে।