জাতীয় ডেস্ক
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোররাতে আমেরিকার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাতার এয়ারলাইন্সের কিউআর৬৩৯ ফ্লাইটে কাতার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পথে রয়েছেন।
বিমানবন্দর সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, সোহেল তাজ রাত ৩টা ৫১ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করেন। এর আগে তিনি ইমিগ্রেশন ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে যাচাই–বাছাই প্রক্রিয়া শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন।
সোহেল তাজ বর্তমানে কাতারের দোহা হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। তিনি নিজে বুধবার সকালে ফেসবুকে একটি পোস্টে ট্রানজিট ও ফ্লাইটের তথ্য জানিয়েছেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিন ঘণ্টার ট্রানজিটের পর ১৫ ঘণ্টার ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছবেন। তিনি দোহা বিমানবন্দরকে তার গত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে বর্ণনা করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, এই সময়ে বিমানবন্দরটি ঢাকার বিমানবন্দরের তুলনায় ছোট ছিল, যা এখন বিশ্বের ব্যস্ততম ও অন্যতম প্রধান বিমানবন্দরের মর্যাদা অর্জন করেছে।
এর আগে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোহেল তাজকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়েছিল। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) তিনি ফেসবুকে ইঙ্গিত দেন যে তার দেশত্যাগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তিনি লিখেছিলেন, “আজকে রাতে আমি হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে আমেরিকার পথে যাত্রা করব।” এর পাশাপাশি তিনি তার চেক-ইন ও ইমিগ্রেশনের অপেক্ষার তথ্যও প্রকাশ করেন।
সোহেল তাজের দেশত্যাগকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দিক থেকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে নজর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত, তাঁর আগে আটকানো হওয়া এবং পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশের মাধ্যমে দেশত্যাগ অনুমোদন পেয়া বিষয়টি দেশের আইন প্রয়োগ এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা সম্পর্কে সমালোচনামূলক পর্যবেক্ষণ তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কার্যকাল এবং পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তাঁর বিদেশ যাত্রা দেশের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পরিবেশে নির্দিষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নির্ভুলতা ও স্বচ্ছতা সম্পর্কিত বিতর্কে।
সোহেল তাজের এই দেশত্যাগের প্রক্রিয়া এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলি বাংলাদেশের বিমানবন্দর নিরাপত্তা, ইমিগ্রেশন নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। বিমানবন্দর সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সব যাচাই–বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই তিনি নির্বিঘ্নে দেশত্যাগ করতে সক্ষম হয়েছেন।
সোহেল তাজের বিদেশ যাত্রা এবং তার আগে বিমানবন্দর থেকে আটকের ঘটনা বাংলাদেশের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক ঘটনাবলীর ওপর নজর রাখার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি করেছে। এর পাশাপাশি, দেশের উচ্চ আদালতের আদেশ কার্যকর করার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশি রাজনৈতিক মহলে এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে সোহেল তাজের বিদেশ যাত্রা এবং এর প্রক্রিয়াগত দিকগুলো নিয়ে সর্তক নজর রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতে অনুরূপ পরিস্থিতিতে নীতি নির্ধারণ ও কার্যকর প্রক্রিয়ার জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করতে পারে।