রাজনীতি ডেস্ক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিএনপি, জামায়াতসহ মোট ১২ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক সোমবার (১৭ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১৯ নভেম্বর সকালবেলায় জামায়াতে ইসলামি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)কে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বিকেল দুইটায় অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নেবে বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার, রবিবার, সোমবার এবং বুধবার এই চার দিনে মোট ৪৮টি দলকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বর্তমানে দেশে নতুন দুটি দলসহ মোট ৫৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে এবং তিনটি দলের নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এই সংলাপের উদ্যোগ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী পরিবেশকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। সংলাপের মাধ্যমে ইসি দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, প্রার্থী তালিকা, ভোটার তালিকা, নির্বাচনী আচরণবিধি এবং ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের মধ্যে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার বার্তা প্রদান করতে পারবে। এছাড়া নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা, ভোটার অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক সহমতের বিষয়ে বিস্তারিত সমন্বয় সাধনের সুযোগও তৈরি হবে।
ইসি আশা করছে, এই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক ও সমঝোতা বাড়িয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সুসংগঠিতভাবে পরিচালনা করতে পারবে। বিশেষ করে সংলাপে অংশ নেওয়া দলের নেতারা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি জানাবে, যা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রস্তুতি শুরু করেছে। ভোটার তালিকার যাচাই, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে এসব প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করার পাশাপাশি তাদের মতামত গ্রহণ করা হবে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংলাপের এই উদ্যোগ নির্বাচনী পরিবেশকে সুসংহত করতে এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তাছাড়া, এটি দলগুলোর মধ্যে বিশ্বাস পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এদিকে, সংলাপের ফলাফল ও পরবর্তী কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরবর্তী সমন্বয় নির্ধারণ করবে, যা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক দৃশ্যপটের স্বচ্ছতা এবং অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।