জাতীয় ডেস্ক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশগ্রহণ করে সাম্প্রতিক জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার রদবদল হয়েছে, যা একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার অংশ মনে হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসনের বদলি লটারির মাধ্যমে করা হলে দলীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব।
গোলাম পরওয়ার আরও জানান, অতীতে কয়েকটি নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর একদিনেই সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে একযোগে বদলি করা হয়েছে এবং এতে ভোটের প্রতি জনগণের আস্থা বজায় ছিল। তিনি নির্বাচন কমিশনকে একমাত্র আস্থার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তফসিলের পর একযোগে সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তার বদলির দাবি জানান।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ ইসির প্রস্তুতি ও আন্তরিকতার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন, তবে এক্সিকিউটিভ লেভেলে কিছু বিষয়ের স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শুধু নীতি স্তরে স্বচ্ছতা থাকলেই হবে না, কার্যকরী স্তরে সমন্বয় ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান সরকারের আমলাতন্ত্রে মৌলিক পরিবর্তন কম হওয়ায় প্রশাসনে দলীয় প্রভাব এখনো বিদ্যমান।
আযাদ বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্মকর্তা নিয়োগ ও বদলি হওয়ায় নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্বের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি লটারির ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ওসি এবং অন্যান্য নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ বদলি করার প্রস্তাব দেন। এছাড়াও, ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য চার থেকে পাঁচ সদস্যের সেনা দল মোতায়েন করার পরামর্শ দেন।
তিনি নির্বাচনী নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য অবৈধ এবং বৈধ অস্ত্র উদ্ধারে উপকূলীয় ও পার্বত্য এলাকায় বিশেষ নজর দিতে সরকারকে আহ্বান জানান। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং ব্যালট পেপার নকলের সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন।
জামায়াতের নেতারা প্রবাসীদের ভোটাধিকার, পোস্টাল ভোটিং এবং জুলাই সনদের আওতাধীন গণভোটের প্রচারণার দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে কথাও উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, এসব ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ সমন্বয় ও নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা বজায় থাকে।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা সংক্রান্ত এই উদ্বেগগুলোর আলোকে দলটি সরকারের সঙ্গে সমন্বয় বাড়িয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করার আহ্বান জানিয়েছে।