জাতীয় ডেস্ক
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আরমানিটোলার কসাইটুলিতে একটি পাঁচ তলা ভবনের অংশ ধসে পড়েছে। ঘটনাস্থলে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দুই ইউনিট। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত ব্যক্তিদের বের করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।
এর আগে একই দিনে সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ এবং এর কেন্দ্রস্থল ঘোড়াশালের নিকটবর্তী এলাকা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফারজানা সুলতানা বলেন, ভূমিকম্পের সময় হালকা থেকে মাঝারি কম্পন রাজধানী এবং দেশের অন্যান্য অংশে অনুভূত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের ভূমিকম্পের পর ছোটখাটো আফটার শকের সম্ভাবনা থাকে, তবে বর্তমানে বড় ধরনের ঝুঁকি দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পের প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, এই ধরনের মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প সাধারণত ছোট আকারের আফটার শক ছাড়া উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করে না। তবে বড় বা পুরনো নির্মাণের ভবনে ধ্বংসের সম্ভাবনা থাকে, যা আরমানিটোলার ঘটনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
পরিস্থিতি অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি প্রস্তুতি ও তৎপরতা বজায় রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এই বছরের শুরুতে, ৫ মার্চ রাজধানীতে ৫.৬ মাত্রার মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। তার আগে, ২৮ মে ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের নিকটে এক ভূমিকম্পে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী জেলায় হালকা কম্পন অনুভূত হয়। এই ইতিহাস অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার মতো মহানগরীতে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংসের ঝুঁকি রয়েছে।
ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে পরিস্থিতি এখনও চলমান। বিশেষজ্ঞরা সাধারণ মানুষকে উঁচু ভবন এড়াতে, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে এবং ভবিষ্যৎ আফটার শকের সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছেন।
উদ্ধার কাজ শেষ হওয়ার পর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকৃতদের স্বাস্থ্যের অবস্থা, প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি এবং ভবিষ্যতের ঝুঁকি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।