জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা, রোববার, ২৩ নভেম্বর: দেশের সামরিক বাহিনী আগামী জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে সুষ্ঠু ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি এ কথা রোববার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন।
সেনাপ্রধান জোর দিয়ে বলেন, “সামনে দেশ একটি নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। সেই নির্বাচনে আমরা যথাযথভাবে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করব, যাতে দেশের জনগণ সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন উপভোগ করতে পারে।” তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত আছে এবং প্রয়োজন অনুসারে দায়িত্ব পালন করবে।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অনুষ্ঠান চলাকালে দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের স্বার্থ এবং মানুষের কল্যাণে সেনাবাহিনী কাজ করে যাবে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি দেশের সকল দায়িত্বশীল কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীর অঙ্গীকারের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৬৪ সেনাসদস্যকে পদক এবং ৭৫ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মাননা প্রদান করেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ৯ জনকে সেনাবাহিনী পদক, ১৭ জনকে অসামান্য সেবা পদক এবং ৩৮ জনকে বিশিষ্ট সেবা পদক প্রদান করা হয়।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের এই অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি মূলত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সাফল্য ও অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আয়োজন করা হয়। এই ধরনের পদক ও সম্মাননা প্রদান প্রথা সেনাবাহিনীর মধ্যে নৈতিকতা, কর্মদক্ষতা ও দেশপ্রেমকে উদ্দীপিত করে।
নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনীর এমন প্রকাশিত অঙ্গীকার দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সামরিক বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার ধারণা বৃদ্ধি করবে।
এছাড়া, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের প্রতি প্রদত্ত সম্মাননা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি বাহিনীর সম্মান প্রদর্শন করছে। সেনাবাহিনী এই মাধ্যমে দেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে সংরক্ষণ ও প্রসারিত করতে সহায়তা করছে।
সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ ও পদক্ষেপ দেশের স্থিতিশীলতা, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।