1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বাসের ধাক্কায় স্কুলছাত্র গুরুতর আহত তাসকিনের আইএল টি–টোয়েন্টিতে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি, সামনে বিপিএল ও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরে পরিকল্পনা রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির রহস্যজনক হত্যা ঢাকায় বিটিআরসির সামনে মোবাইল ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে যানজট ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র ও সূচি ঘোষণায় ট্রফি স্পর্শবিষয়ক বিভ্রান্তি নিয়ে ব্যাখ্যা ফিফার বার্সেলোনার গোলবন্যায় রিয়াল বেটিস পরাস্ত ভারত–রাশিয়া ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত অস্থিরতার কারণে: পেন্টাগনের সাবেক কর্মকর্তা নূর সিনেমা ওটিটিতে মুক্তির আগে আলোচনায় শুভ–ঐশীর অভিনয় নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগে কওমি সনদের অন্তর্ভুক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ১১৪ অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তে রায়েরবাজারে মরদেহ উত্তোলন শুরু

ডেঙ্গুতে আরও ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৭৮

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৩ বার দেখা হয়েছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক

শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৭৭৮ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দৈনিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দিনে দেশের বিভিন্ন বিভাগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা মহানগরীর দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সর্বাধিক রোগী ভর্তি হলেও বিভাগীয় শহরগুলোর হাসপাতালগুলোতেও রোগীর চাপ বাড়ছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, নতুন ভর্তি হওয়া ৭৭৮ জন রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৮৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৪ জন, ঢাকার সিটি কর্পোরেশনের বাইরের এলাকায় ১২১ জন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ১২৯ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৮১ জন ভর্তি হয়েছেন। খুলনা বিভাগে ১১২ জন, ময়মনসিংহে ৪৪ জন, রাজশাহীতে ৪৮ জন, রংপুরে ১৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ৭ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট, চিকিৎসাসেবায় চাপ এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে এক হাজার ১১১ জন রোগী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৪৪২ জন।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেশে মোট ৯০ হাজার ২৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ৩৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীর এই সংখ্যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেঙ্গুর বিস্তারের একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে। রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

ডেঙ্গুর বিস্তার ঋতুভেদে পরিবর্তিত হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রোগের প্রকোপ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বার্ষিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন। ওই বছর ডেঙ্গুজনিত কারণে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু এবং তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা দেশের পরিসংখ্যানে ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ বিস্তার হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর পাশাপাশি নাগরিকদের বাড়তি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশাবাহিত Aedes প্রজাতির মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বাসাবাড়ির পানি জমে থাকা কোণ, অব্যবহৃত পাত্র, নির্মাণাধীন ভবনের পানি জমার স্থান এবং ছাদে রাখা ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রোগীরা দ্রুত চিকিৎসা নিতে না আসলে জটিলতা বাড়তে পারে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং পূর্ব-বিদ্যমান রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই জ্বর দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গুর চলতি পরিস্থিতি বিবেচনায়, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সম্ভাব্য ঝুঁকি অঞ্চল চিহ্নিত করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত ফগিং কার্যক্রম, লার্ভিসাইড ব্যবহার এবং মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌসুমভিত্তিক প্রাদুর্ভাবের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনও ডেঙ্গুর বিস্তারে ভূমিকা রাখছে, যা ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু পরিস্থিতির সামগ্রিক চাপ মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোগীর হঠাৎ বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের প্রস্তুতির কথাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। নিয়মিত নজরদারি, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ—এসবই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com