জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা, সোমবার: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি মামলার জট কমানো সম্ভব। তিনি বলেন, এর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মামলা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সমাধান হবে। এসব মন্তব্য তিনি ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতে সোমবার অনুষ্ঠিত ই-পারিবারিক আদালতের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে করেন।
ড. আসিফ নজরুল জানান, দেশের বিচারব্যবস্থার জট কমানো একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, “রাতারাতি সংস্কার সম্ভব নয়। সংস্কার মানে আইনের পরিবর্তন, যা ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হবে।” তিনি এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যেই আইন মন্ত্রণালয় ২১টি আইনি রিফর্মের কাজ হাতে নিয়েছে, যার মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুততর এবং সহজলভ্য করা সম্ভব হবে।
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু করার মাধ্যমে এই সংস্কারের প্রথম ধাপ বাস্তবায়ন করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো দেশকে ভালোবাসার দৃষ্টিকোণ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু করা বাকি থাকা কাজগুলো সম্পন্ন করবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান। ই-পারিবারিক আদালত কার্যক্রম শুরু হওয়ায় পরিবারের বিভিন্ন বিরোধ এবং বিবাদ দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে সমাধান করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
আইন উপদেষ্টার এই বক্তব্য দেশের বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন ও মামলার জট কমানোর পরিকল্পনার প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় মামলা সমাধানের ধীরগতির কারণে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই ধরনের ই-সেবা ও লিগ্যাল এইডের প্রসার সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী, বিচার ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং জনগণের কাছে সহজলভ্য করার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আইন সংস্কারের অংশ হিসেবে ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ও অন্যান্য ডিজিটাল উদ্যোগের মাধ্যমে মামলা সংক্রান্ত তথ্য দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে। এর ফলে আদালতে মামলা চলাকালীন সময় এবং প্রশাসনিক বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
পেশাদাররা মনে করছেন, ই-পারিবারিক আদালত বিশেষ করে পারিবারিক বিরোধ, শিশুসংক্রান্ত মামলা, ও নারী সংক্রান্ত মামলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। এছাড়া, এটি নারী ও শিশুদের জন্য বিচার প্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ ও সহজলভ্য করবে।
আইন উপদেষ্টার এই মন্তব্য দেশের আইনি সংস্কার ও বিচার ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থানকে স্পষ্টভাবে চিত্রিত করছে। আগামী পাঁচ বছরে পরিকল্পিত রিফর্মগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের বিচারব্যবস্থায় কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।