জাতীয় ডেস্ক
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০:৩০ মিনিটে নির্বাচন ভবনে দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দিনব্যাপী সংলাপে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপের মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে ইসির অভিমত বিনিময় করা।
সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন দেশের নাগরিকদের একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতের ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিশন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। সিইসি বলেন, “আমাদের এজেন্ডা একটাই, একটি ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেওয়া। একটি ভালো নির্বাচন আয়োজন আমাদের দায়িত্ব। ভালো নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।”
প্রধান কমিশনার পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতি বিশেষভাবে দুটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। প্রথমত, নতুন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা। সিইসি বলেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সঠিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনী পর্যবেক্ষণে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলকে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। তিনি সতর্ক করে জানান, পর্যবেক্ষকরা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না হন এবং তাদের কর্মকাণ্ড নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখে।
সংলাপে ইসি এবং পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ভোটের মাঠে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়াও নির্বাচনের সময় সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ, তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্টিং প্রক্রিয়া, এবং পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমের মানোন্নয়ন বিষয়েও বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর সঙ্গে এ ধরনের সংলাপ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি শুধু ভোটের মান নিশ্চিত করবে না, বরং নির্বাচনী জবাবদিহিতা ও জনগণের প্রতি আস্থা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।
সংলাপের মাধ্যমে নতুন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জটিলতা ও নিয়ম-কানুন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের কার্যকর ও নিরপেক্ষভাবে মাঠ পর্যবেক্ষণ করতে প্রস্তুত করা হবে। এ ধরনের উদ্যোগ আগামী নির্বাচনের ফলাফলকে আরো বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সহায়তা করবে বলে ইসি আশা করছে।
এছাড়াও, কমিশন এ ধরনের সংলাপ নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যাতে ভোটার, প্রার্থী এবং পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি স্বচ্ছ ও সমন্বিত পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য কমিশনের।
সংলাপের সমাপনীতে সিইসি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান, তারা যেন দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বার্থে সঠিক ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেন এবং ভোটের মাঠে সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্টিং নিশ্চিত করেন।
এই সংলাপের মাধ্যমে ইসি দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, সুশৃঙ্খল এবং বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সুসংহত সমন্বয় তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।