জাতীয় ডেস্ক
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এছাড়া অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ ও ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর, রুল শুনানি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে হস্তান্তর করা হবে না বলে আদালতকে আশ্বস্ত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আদালতে তিনি জানান, রুলের শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত চুক্তি কার্যকর করা হবে না।
গত ৩০ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেন। রুলে হাইকোর্ট জানতে চায়, কেন এই প্রক্রিয়া আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং কেন সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং বা দরপত্র আহ্বান না করে কোনো অপারেটরকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে না।
রিটটি বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষ থেকে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন দায়ের করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহীকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটে উল্লেখ করা হয়েছে, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা থাকলেও কেন তা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করা হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। বিষয়টি নিয়ে গত ২৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যা রিটে যুক্ত করা হয়। সেইসাথে অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোও রিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর কার্যক্রমের অংশ হওয়ায় এর পরিচালনা ও চুক্তির প্রক্রিয়া দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং হাইকোর্টের রায় চুক্তির বৈধতা ও ভবিষ্যৎ নীতিমালার ওপর গুরুত্বপুর্ণ প্রভাব ফেলবে।
চুক্তি কার্যকর হলে এনসিটির পরিচালনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে গেলে দেশের বন্দর নীতিমালা, প্রতিযোগিতামূলক বাজার এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কাঠামোর ওপর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। রুলের শুনানি শেষে আদালতের নির্দেশনা বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনা ও বিদেশি বিনিয়োগ নীতির সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।