জাতীয় ডেস্ক
লিবিয়া থেকে ১৭৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী সোমবার (১ ডিসেম্বর) তারা দেশে পৌঁছবেন। বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) যৌথভাবে তাদের ফিরিয়ে আনছেন।
লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গত ২৬ নভেম্বর ত্রিপলির তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত জানান, অনেক অভিবাসী অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে চরম ঝুঁকির মুখোমুখি হন এবং মানবপাচারকারীদের কার্যক্রমের কারণে বিভিন্ন দুঃসহ অভিজ্ঞতার শিকার হন। তিনি অভিবাসীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আল্লাহর অসীম রহমতে তারা সাগর থেকে জীবিত উদ্ধার হয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দূতাবাস দ্রুত সময়ে সবাইকে দেশে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৭৫ জনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে এবং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আইওএম-এর সহায়তায় তাদের ফেরতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
তিনি আটক বাংলাদেশিদের দেশের ফিরে তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। একই সঙ্গে মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, আইওএম-এর সহায়তায় পর্যায়ক্রমে সব আটক বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য দূতাবাস নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
পরিদর্শনকালে দূতাবাসের পক্ষ থেকে উপস্থিত অভিবাসীদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়া রাষ্ট্রদূত তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি সাগর থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্ধার এবং পরবর্তী মানবিক সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, লিবিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরত পাঠানো একটি প্রক্রিয়াগত ও মানবিক উদ্যোগ। দেশে ফেরার পর তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুনর্বাসন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।