নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, শনিবার, ২৯ নভেম্বর: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন মোনাজাত পরিচালনা করেন।
সভায় বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হয়। সংশোধনের ফলে বর্তমান আইনের বিভিন্ন ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এনজিও নিবন্ধনের নিয়ম সরলীকৃত হয়েছে এবং অনুদান অবমুক্তির শর্তগুলো সহজ করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদানের ক্ষেত্রে আর পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন থাকবে না। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে আইনটি আরও অংশীজনবান্ধব ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
সভায় পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া উত্থাপিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশটি আরও বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করে সংশোধিত আকারে পরবর্তী সভায় উত্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। এ অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে পুলিশ প্রশাসনের কাঠামো ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সভায় অবগত করেন যে, আরব আমিরাতে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে আটক থাকা ২৪ জন প্রবাসী নাগরিক অচিরেই মুক্তি পাবেন। তিনি জানান, তাদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া দু-তিন দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এ পদক্ষেপ প্রবাসী নাগরিকদের পুনর্বাসন এবং সরকারের মানবিক নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা পরিষদের আজকের সভা সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও নীতিগত পদক্ষেপকে কার্যকরভাবে এগিয়ে নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বৈদেশিক অনুদান ও পুলিশ কমিশন সংক্রান্ত সংশোধিত অধ্যাদেশগুলি দেশের স্বেচ্ছাসেবামূলক সেক্টর ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সম্ভাব্য প্রভাব ফেলবে। বিশেষত, এনজিওর জন্য সহজতর অনুদান প্রক্রিয়া এবং পুলিশ কমিশন সংশোধনের মাধ্যমে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং অংশীজনদের সংযুক্তি বৃদ্ধি পাবে।
সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রবাসী নাগরিকদের দেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই পদক্ষেপগুলো সরকারের নীতিগত অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমকে জনবান্ধব করার লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের আজকের সভা সরকারি নীতিমালা প্রণয়ন, সামাজিক সুরক্ষা এবং প্রবাসী কল্যাণ কার্যক্রমে সমন্বয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে বৈদেশিক অনুদান ও পুলিশ কমিশন সংশোধনের মাধ্যমে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রভাবশীল পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে সক্ষম।