1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ২৪ বার দেখা হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে জালিয়াতি, তথ্য গোপন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় শেখ রেহানাসহ ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় বিচারক মো. রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন। মামলাটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগে দীর্ঘ তদন্ত, সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে চূড়ান্ত রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তিতে আসে।

রায়ে আদালত বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ সাক্ষ্য-প্রমাণ ও নথিপত্রের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর ভিত্তিতে শেখ রেহানাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য ১৫ আসামিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলার নথি অনুযায়ী, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাপ্যতার মানদণ্ড, সরকারি বিধি এবং নীতিমালা লঙ্ঘন করে আবেদন গ্রহণ, সুপারিশ এবং চূড়ান্ত বরাদ্দ প্রদানের অভিযোগ ওঠে। দুদক অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে এবং বরাদ্দ–সংক্রান্ত নথিপত্র, অনুমোদন প্রক্রিয়া, যাচাইপদ্ধতি ও আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু অসঙ্গতি শনাক্ত করে। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকারি দায়িত্বে থাকা কিছু ব্যক্তি তাদের অবস্থানের সুযোগ নিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেন এবং কয়েকজন আবেদনকারী মিথ্যা তথ্য প্রদান করে প্লট লাভ করেন।

রায়ের মাধ্যমে আদালত সরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত এবং দায়িত্বশীল অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদের জবাবদিহির ওপর জোর দেন। আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রকল্পে অনিয়ম, পক্ষপাত বা অবৈধ সুবিধা গ্রহণ সরকারি নীতির পরিপন্থী এবং এতে জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন হয়। এই ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের বিভিন্ন সেক্টরে নির্দিষ্ট পেশাজীবী, শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যান্য বিশেষ কোটা অনুসরণ করে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। তবে অভিযোগে বলা হয়, বরাদ্দের ক্ষেত্রে নিয়মিত প্রক্রিয়া স্থগিত রেখে কিছু আবেদন দ্রুত গ্রহণ এবং অনুমোদন দেওয়া হয়। তদন্তে আরও পাওয়া যায়, কিছু আবেদন প্রয়োজনীয় যাচাই ছাড়াই অনুমোদিত হয়, যা সরকারি বিধিমালার লঙ্ঘন।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় প্রশাসনিক খাত, ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে জবাবদিহির বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার সুযোগ সৃষ্টি করবে। তারা মনে করেন, সরকারি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনিয়ম দমন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে রায়ের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে প্রতিফলিত হতে পারে। একই সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়ম মেনে আবেদন, যাচাই ও বরাদ্দ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালো হবে।

রায়ের পর মামলার নথি পর্যালোচনার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আসামিপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পাবে, যা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আইনি বিশেষজ্ঞরা জানান, আপিল প্রক্রিয়া শুরু হলে মামলার রায়ের কার্যকারিতা ও দণ্ডাদেশের বহাল থাকা বিষয়টি উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প রাজধানীর ঘনত্ব কমানো, আবাসিক সেবা সম্প্রসারণ এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ ত্বরান্বিত করার অন্যতম বৃহত্তম উন্নয়ন উদ্যোগ। প্রকল্পটির বিভিন্ন সেক্টরে প্লট বরাদ্দ দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে এবং স্বচ্ছতা–সংক্রান্ত প্রশ্নও বহুবার উঠেছে। আদালতের এই রায় ভবিষ্যতে সরকারি ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পে প্রক্রিয়াগত কঠোরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এক নজির হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

রায় ঘোষণার পর আদালত সংশ্লিষ্ট সব নথি হস্তান্তরের নির্দেশ দেন এবং দণ্ডপ্রাপ্তদের জেলহাজতে প্রেরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। মামলার পরবর্তী ধাপ হিসেবে রায়ের নথি আপিল বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তুত করা হচ্ছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই মামলার রায় প্রশাসনিক ও উন্নয়ন প্রকল্প–সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলোতে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের গুরুত্ব আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com