নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে চিকিৎসা গ্রহণ করতে সক্ষম আছেন এবং তার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডা. জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়া বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিকভাবে তার চিকিৎসার তদারকি করছেন এবং দেশের ও বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এছাড়া দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও চিকিৎসা সেবা প্রদানে যথাযথ সহযোগিতা করছেন।
তিনি আরও জানান, দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়টি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইউকে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসবেন। মেডিকেল বোর্ড যদি মনে করে যে তিনি বিদেশে চিকিৎসার জন্য ‘ট্রান্সফারেবল’ এবং বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন, তখনই সময়মতো তার স্বাস্থ্যসেবার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডা. জাহিদ বলেন, সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর গত ২৭ নভেম্বর থেকে তাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয় এবং দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা অব্যাহত আছে।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন গুজব ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে সংযম প্রদর্শনের এবং কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তথ্য সরবরাহের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি আছেন এবং শুধুমাত্র তিনি এবং দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজবী স্বাস্থ্যসংক্রান্ত এবং অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে ব্রিফিং দেবেন।
এদিকে, গত রাত থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে দুই পাশে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে এবং পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে এবং হাসপাতালের আশপাশে জনসমাগম সীমিত রাখতে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, দলের পক্ষ থেকে দেশের জনগণকে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া এবং ধৈর্য রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।