জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ইসলামনগর এলাকায় অনুষ্ঠিত এক মহিলা সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অতীত শাসনব্যবস্থা ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আয়োজিত ওই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি সরকারের পরিবর্তন, গণতন্ত্র ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা সম্পর্কে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
সমাবেশে বক্তৃতাকালে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, অতীত সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল এবং দীর্ঘ সময় দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, জনগণের আন্দোলনের মুখে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটেছে এবং রাজনৈতিক কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা দুর্বল হয়েছে। তার বক্তব্যে তিনি সাবেক সরকারের দেশীয় ও পররাষ্ট্রনীতিগত ভূমিকা নিয়েও মন্তব্য করেন এবং দাবি করেন, দেশের স্বার্থের পরিপন্থী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর আস্থা কমে গিয়েছিল, তবে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় জনগণ নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কে আগের তুলনায় বেশি সচেতন। তিনি দাবি করেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জনগণ সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। বক্তব্যে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে।
সমাবেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দেশে অর্থনীতি, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে বলে তার দলের মূল্যায়ন। তিনি জানান, ভবিষ্যতে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে এসব খাতে কাঠামোগত সংস্কার ও পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তার বক্তব্যে রাজনৈতিক সংস্কার, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
আয়োজিত মহিলা সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেত্রী হাসিনা আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না এবং স্থানীয় পর্যায়ের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বক্তারা নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সাংগঠনিক শক্তিশালীকরণ এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। আয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যাতে কর্মসূচিটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।
সমাবেশে প্রদত্ত বক্তব্য ও ঘোষণাগুলো দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপির অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। এর মাধ্যমে দলটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি ও নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে স্থানীয় পর্যায়ে বার্তা পৌঁছেছে।