1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
বিএনপির সমাপনী কর্মসূচিতে তারেক রহমানের বক্তব্যে দুর্নীতি দমন ও গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর খাদ্যে রাসায়নিক দূষণ রোধে সমন্বিত উদ্যোগের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার স্মৃতি মান্ধানা ও পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে ভাঙার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি ৫৬১ টাইফয়েড টিকা অভিযানে দেশে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুর সুরক্ষা নির্বাচনের আগের রাতে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে আসছে অগ্রগতি এসএমই পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার অনুসন্ধানের ওপর গুরুত্ব মোস্তাফিজের সফল অভিষেকেও দুবাই ক্যাপিটালসের পরাজয়

নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগে কওমি সনদের অন্তর্ভুক্তি

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) পদে নিয়োগের যোগ্যতার পরিধি সম্প্রসারণ করে কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃত দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রিধারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় আইনের সংশোধন সম্পন্ন করায় রোববার ৭ ডিসেম্বর থেকে এই ডিগ্রিধারীরাও পদটিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি জানান, এতদিন নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের ক্ষেত্রে আলিম বা সমমানের সনদধারীদের জন্য সুযোগ সীমাবদ্ধ ছিল। সংশ্লিষ্ট বিধিমালায় সংশোধনের মাধ্যমে নিকাহ রেজিস্ট্রার হওয়ার যোগ্যতার তালিকায় কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক উচ্চতর ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিস যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে দেশের স্বীকৃত কওমি মাদ্রাসা বোর্ডগুলোর অধীনে শিক্ষা সম্পন্নকারী আলেমরা এই পদের জন্য অন্যান্য যোগ্যতার পাশাপাশি আবেদন করতে পারবেন।

বাংলাদেশে নিকাহ রেজিস্ট্রার পদটি মুসলিম বিবাহ নিবন্ধন ও সংশ্লিষ্ট আইনগত নথিপত্র প্রস্তুতকরণের দায়িত্বে নিয়োজিত একটি সরকারি অনুমোদিত পদ। স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি এলাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রার্থীকে সাধারণত নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, চরিত্র ও স্থানীয়তার প্রমাণসহ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে আলিম বা সমমানের সনদধারীদের এই পদের প্রধান যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও কওমি ধারার উচ্চতর শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠছিল বিভিন্ন মহল থেকে।

কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি ইতোমধ্যে দেশের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় এলএলএম বা মাস্টার্স সমমানের স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৮ সালে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কওমি সনদকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর বিভিন্ন প্রশাসনিক ও পেশাগত ক্ষেত্রে এ ডিগ্রিধারীদের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা চলছিল। নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের যোগ্যতায় দাওরায়ে হাদিস অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কওমি শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র উন্মুক্ত হলো।

আইন মন্ত্রণালয়ের সংশোধনী অনুসারে, যোগ্যতার অন্য শর্তগুলো আগের মতোই বহাল থাকবে। অর্থাৎ ডিগ্রির পাশাপাশি প্রার্থীকে স্থানীয় প্রশাসনের নির্ধারিত অন্যান্য মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। সংশোধনের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষাগত সীমাবদ্ধতা দূর করে বৃহত্তর পরিসরের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে স্থানীয় পর্যায়ে সেবার ক্ষেত্রটি আরও বিস্তৃত এবং সহজলভ্য হয়।

বাংলাদেশে নিকাহ নিবন্ধন ব্যবস্থা একটি দীর্ঘপ্রচলিত আইনগত কাঠামোর অধীনে পরিচালিত হয়। বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হওয়ায় নিবন্ধন কার্যক্রমে দায়িত্বশীল, দক্ষ ও ধর্মীয় বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। সংশোধনের ফলে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামি শিক্ষালাভ করা আলেমদের এই ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ বাড়বে, যা স্থানীয়ভাবে ধর্মীয় জ্ঞানসম্পন্ন নিবন্ধনকারী নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, কওমি মাদ্রাসা দেশের প্রচলিত দ্বৈত মাদ্রাসা ব্যবস্থার একটি প্রধান ধারা। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অনুসরণে দারুল উলুম দেওবন্দের পাঠক্রম ও নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠান মূলত ইসলামের উচ্চতর শিক্ষায় বিশেষায়িত। শিক্ষার্থীরা কুরআন-হাদিস, ফিকহ, আরবি ভাষা, ইসলামী ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে ধাপে ধাপে সুপরিকল্পিত পাঠক্রম সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসে উত্তীর্ণ হন। এই ধারার শিক্ষা দেশের ধর্মীয় পরিমণ্ডলে দীর্ঘদিন ধরে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত অবস্থান ধরে রেখেছে।

সংশোধিত নীতিমালা কার্যকর হওয়ায় নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগে প্রার্থীর পরিধি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। নতুন যোগ্যতা যুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ভৌগোলিক ও দক্ষতাগত দিক থেকে যোগ্য ব্যক্তির অভাব থাকলে তা পূরণে সুবিধা হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ভবিষ্যতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ এবং পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে।

অনেকে মনে করছেন, ধর্মীয় শিক্ষায় উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা নিবন্ধন কার্যক্রমে যুক্ত হলে মুসলিম পারিবারিক আইন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় বোঝার ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে। একই সঙ্গে বিবাহ নিবন্ধন নিয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও রেজিস্ট্রারদের ভূমিকা আরও কার্যকর হতে পারে। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং আইনগত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে প্রশিক্ষণ ও তদারকি নিশ্চিত করা আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ থাকবে।

আইন মন্ত্রণালয়ের সংশোধন কার্যকর হওয়ায় কওমি শিক্ষাব্যবস্থার স্বীকৃত ডিগ্রিধারীদের জন্য আরেকটি নতুন কর্মক্ষেত্র উন্মুক্ত হলো, যা সামগ্রিকভাবে দেশে নিবন্ধন ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত ও দক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com