জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারে শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ ‘দি আটলান্টিক ক্রুজে’ আগুন লাগার পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে পর্যন্ত জাহাজের ফিটনেস ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত হয়, রোববার থেকে কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়বে না।
সভায় জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান জানান, সেন্ট মার্টিনের পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাতের মধ্যেই সচল থাকা সব জাহাজের ফিটনেস ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পুনঃপরীক্ষার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র এই পরীক্ষা উত্তীর্ণ জাহাজই রোববার থেকে সেন্ট মার্টিনগামী যাত্রা শুরু করতে পারবে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যেসব জাহাজের যাত্রা বাতিল হবে, তাদের যাত্রীদের সুবিধার্থে অনুমোদিত অন্যান্য জাহাজে সমন্বয় করে যাত্রার ব্যবস্থা করা হবে।
সভায় জেলা পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং জাহাজ মালিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাজে আগুন লাগার ঘটনা শনিবার সকাল ৭টার দিকে নুনিয়ারছড়া ঘাটে যাত্রী তোলার ঠিক আগ মুহূর্তে ঘটে। ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও জাহাজের নিচতলায় ঘুমন্ত অবস্থায় নুর কামাল নামে এক কর্মচারী নিহত হন। যাত্রী ওঠার আগেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটায় ঘাটে অপেক্ষা করছিলেন ১৯৪ জন পর্যটক, যারা সৌভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মাঝসমুদ্রে এ ঘটনা ঘটলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেশি হতে পারত।
কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে গত ১ ডিসেম্বর থেকে সাতটি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমোদন পেয়েছে। জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও নিয়মিত তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।