1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
বেগম খালেদা জিয়া আর নেই ফেনী-২ আসনে চমক: জামায়াত প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মনজু নেমেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার দুই আসনে বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চীনের সামরিক মহড়া “জাস্টিস মিশন-২০২৫” তাইওয়ানকে ঘিরে শুরু মেহজাবীন চৌধুরীর বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ড নাইট লুক মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বিজিবি দিবস-২০২৫ পালন: ৭২ সদস্য পদকপ্রাপ্ত ড. খলিলুর রহমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব নেবেন ‘গুজব’ দাবি করলেন তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিকার আলী শিমুলসহ চারজনের নিয়োগ বাতিল ৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু ১ জানুয়ারি

বেগম খালেদা জিয়া আর নেই

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১৯ বার দেখা হয়েছে

জাতীয় ডেস্ক

জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও তিনবারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভোর ৬টায় (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ইন্তিকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বিএনপি মিডিয়া সেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে বেগম খালেদা জিয়া বিভিন্ন জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনিসহ নানা রকম রোগে আক্রান্ত থাকার কারণে গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দেশের ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলে আসছিল। চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শারীরিক অবস্থা ব্যহতের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের আধুনিক রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নতুন নেতৃত্বে আসার পর তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মোট তিনবার তিনি দেশের কার্যকারি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন এবং দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজের স্থান দৃঢ় করেন। মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নির্বাচিত নারী সরকারপ্রধান হিসেবেও তিনি সুপরিচিত।

১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলার ইস্কান্দার মজুমদার ও তৈয়বা মজুমদারের পরিবারে বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম। তাঁর পৈতৃক ভিটা ফেনীতে হলেও তাঁর বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে দেশভাগের পর তৎকালীন পাকিস্তানে চলে আসেন। স্কুলপড়াশোনা তিনি করেন দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং পরবর্তীতে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে অধ্যয়ন করেন।

জীবনের প্রথম দিকে তিনি মেট্রোপলিটন জীবন ও রাজনীতির বাইরে থাকলেও ১৯৬০ সালে বিয়ের মাধ্যমে তাঁর জীবনে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। তিনি দেশীয় রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে বিয়ে করেন। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকাকালে বেগম খালেদা জিয়া ফার্স্ট লেডি হিসেবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কিছু রাষ্ট্রীয় সফরে অংশ নেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার, নেদারল্যান্ডসের রানি জুলিয়ানাসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের উপস্থিতিকে দৃঢ় করেছিল।

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড ও ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাজনৈতিক তৎপরতা ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। ওই সময় তিনি বিএনপিতে সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালের মার্চে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালের আগস্টে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। এর পর থেকে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন ও দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া অনন্য একটি রেকর্ডের অধিকারী। তিনি কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পাঁচটি পৃথক আসন থেকে বিজয়ী হন। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবটিতেই জয়লাভ করেন। এই বিজয়ের ধারাবাহিকতা তাঁকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষভাবে আলোকিত করে তোলে এবং বিপুল জনসমর্থনের প্রতীক হিসেবে প্রমাণিত করে।

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, পার্লামেন্টের কার্যক্রম, বিভিন্ন সরকারের নীতি-নির্ধারণ ও নির্বাচনসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাঁর উপস্থিতি ও ভূমিকা ছিল স্বতন্ত্র। দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন সময়ে সরকারের নীতি, নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ তৈরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়েছে, যা বাংলাদেশ রাজনীতির গতিপথকে প্রভাবিত করেছে।

তাঁর মৃত্যুতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন শোক প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক পর্যায় ও সাধারণ জনগণের মধ্যে বিষন্নতা বিরাজ করছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিশ্বাসযোগ্য, দৃঢ় ও অম্লান সৈনিকের মৃত্যু দেশীয় রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি শূন্যতার সৃষ্টি করেছে।

এমতাবস্থায়, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উত্তরসূরির প্রশ্ন ও দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্ব নিয়ে, গণতান্ত্রিক শক্তির সমন্বয় ও জাতীয় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাঁর অনুপস্থিতি কীভাবে প্রতিফলিত হবে তা সময়ের আলোকে দেখা বাকি।

বেগম খালেদা জিয়া বহু ইতিহাস রচনা করেছেন এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর নাম দীর্ঘদিন স্মরণীয় থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একটি রাজনৈতিক ও জননেত্রী শূন্যতায় চলে গেলো।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com