1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

‘এমপি ভাবি’দের দৌড়ঝাঁপ

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২৯ মে, ২০২১
  • ২৮৭ বার দেখা হয়েছে

সাইফুল ইসলাম

জাতীয় সংসদের ঢাকা, কুমিল্লা ও সিলেটের শূন্য হওয়া তিনটি আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চান প্রয়াত সংসদ সদস্যদের সহধর্মিনীরা। প্রয়াত স্বামীদের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করাসহ উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্যই দলের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা-১৪ আসনের প্রয়াত এমপি আসলামুল হকের স্ত্রী মাকসুদা হক, কুমিল্লা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুর স্ত্রী সেলিনা সোবহান ও সিলেট-৩ আসনের প্রয়াত এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী তাদের স্বামীদের আসনে মনোনয়ন পেতে এরইমধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। আব্দুল মতিন খসরু এবং মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আসলামুল হক আসলাম।

ক্ষমতাসীন দল হওয়ায় এসব আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে অবশ্য একইসঙ্গে তৎপর আছেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও। তাই মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার পাশাপাশি দলের প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। প্রয়াত সংসদ সদস্যদের স্ত্রীরাও বসে নেই।

তারাও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং কথা বলছেন। স্বামীর আসনে নির্বাচনের অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন পাবেন কি না, না পেলে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করবেন কি না, অন্য প্রার্থীরা তাদের বিব্রত করছেন কি না- এমন নানা বিষয়ে সাবেক তিন এমপির স্ত্রীরা কথা বলেছেন মানবকণ্ঠের সঙ্গে।

ঢাকা-১৪: প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হকের এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন কি না- জানতে চাইলে তার স্ত্রী মাকসুদা হক বলেন, আমি এই আসনে দলীয় মনোনয়ন আশা করছি। যেহেতু আমার স্বামী এখন নেই, তাই তার রেখে যাওয়া অসম্পূর্ণ কাজগুলো ভালোভাবে সম্পন্ন করতে আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি এ আসনে যেসব কাজ শুরু করেছিলেন, তা নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করতেন যে কীভাবে কাজগুলো দ্রুত শেষ করবেন। তাই আমি জানি এই কাজগুলো কীভাবে শেষ করতে হবে।

তিনি বলেন, উপরে আল্লাহ আর নিচে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিলে আমি আমার স্বামীর অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করার যোগ্যতা রাখি।

আসলামুল হকের কী কী অসম্পূর্ণ কাজ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার তো সব কিছু মোটামুটি গোছানোই ছিল। যখন নির্বাচন করেছিলেন, তখনই তো ভাই এলাকাবাসীর কাছে কী কী ওয়াদা করেছিলেন এবং কী কী কাজ শুরু করেছিলেন তা জানা আছে। এখনো এগুলো বলার এখন সময় আসেনি। নির্বাচন তফসিল পিছিয়েছে। আমার মনে হয়, এখন আগ বাড়িয়ে বলার কিছু নেই। তবে সময় এলে অবশ্যই বলব।’

দলীয় মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না জানতে চাইলে মাকসুদা হক বলেন, ‘না, না। সেটার চিন্তা নেই। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। দলের মধ্যে তার (আসলামুল হক) যে ত্যাগ এবং তিনি যে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন সেদিকে লক্ষ করলে আমার মনে হয় না আমাকে বিদ্রোহী প্রার্থী হতে হবে। আমি আশাবাদী।’

আসলামুল হকের মৃত্যুর পরে ঢাকা-১৪ আসনে এত প্রার্থী- বিষয়টি আপনাকে বিব্রত করছেন কি না- এ প্রসঙ্গে মাকসুদা হক বলেন, ‘বিব্রত হচ্ছি না। আসলে গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সবারই প্রার্থী হওয়ার অধিকার রয়েছে। সবাই দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন। এখন দেয়ার মালিক আল্লাহ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। তারপরে ওর মতো নিবেদিতপ্রাণ, যে পার্টির নেতা-কর্মীদের জন্য এত কিছু করে গেছে, তাকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া খুবই আশ্চর্য লাগে। দুঃখ লাগে, কষ্ট লাগে। তার মৃত্যুর ৪০ দিন না যেতেই এত পোস্টার, এতই… মনে হচ্ছে নির্বাচন চলে আসছে। অতি উৎসাহী দেখলে মন কষ্ট পায়।’

আসলামুল হকের জনপ্রিয়তা, নাকি অন্য কারণে এত প্রার্থী- এমন প্রশ্নে মাকসুদা বলেন, ‘ভাইয়ের জনপ্রিয়তার জন্য হলে তো সবাই একটু ভাইয়ের পরিবারের দিকে তাকাতো। কী জন্য এই জায়গায় এত প্রার্থী তা আসলে বলা মুশকিল। তাদের হয়তো জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন। তাদের কাছ থেকে এই উত্তরটা ভালোভাবে পাবেন।’

জীবিত থাকতে আসলামুল হক আপনাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসতে চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার রাজনীতিতে আসার কোনো কথাই ছিল না। তিনি তো আমার সিংহপুরুষ নেতা ছিলেন। তবে আমরা যখন রাতে গল্প করতাম, তখন হাসির ছলে বলেছিলেন একবার, আমার কিছু হয়ে গেলে তুমি যদি চাও আপা (শেখ হাসিনা) তোমাকে দিয়ে দেবে। জানি না কেন তিনি এই কথাটা বলেছিলেন। করোনার সময় যখন চারদিকে মৃত্যুর মিছিল তখন আমরা গল্প করতে গিয়ে এই কথাটা বলেছিলেন। কখন কে চলে যায় বলা যায় না।’

কুমিল্লা-৫: প্রয়াত অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুর নির্বাচিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন কি না জানতে চাইলে তার স্ত্রী সেলিনা সোবহান বলেন, ‘আমি মনোনয়ন চাইব। এখন মনোনয়ন দেয়াটা আল্লাহ আর প্রধানমন্ত্রীর হাতে।’

নির্বাচনের জন্য কি রাজনীতিতে হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জীবিত থাকতে আমি আমার স্বামী সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতাম। কম্বল বিতরণে ছিলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও নিজের প্রচারে ব্যস্ত থাকতাম না। প্রচারবিমুখ ছিলাম। আমি লোক দেখানো কাজ কখনো করিনি। আর লোক দেখানো কাজ করে লাভ হবে না। আমি উনার পেছনে থেকে অনেক কাজ করেছি। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে উনার সঙ্গে গিয়েছিলাম। উনি বাড়িতে এলে সবাই আসত। আমাকে সবাই দেখত। আমি রাজনীতি করব এটা তো বলার দরকার ছিল না।’

আপনার পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুনেফ ওয়াসিফ (মতিন খসরুর ছেলে) তো জার্মানিতে আছে। ও তো রাজনীতি করবে না বলেই চলে গেছে। পরিবার বলতে গেলে আমি ও আমাদের ছেলেমেয়ে। মেয়ে তো গভর্নমেন্ট জবে আছে। পেশায় ডাক্তার। আমার স্বামীর ভাই তো আরেক পরিবার। সরাসরি পরিবার বলতে গেলে আমি। আর মনোনয়ন সবাই চাইতে পারে। মনোনয়ন তো দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যাকে দেবেন, তিনি নৌকা নিয়ে আসবেন। গণতন্ত্র সবার অধিকার দিয়েছে।’

দলীয় মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লোকাল আওয়ামী লীগের অনেকেই মনোনয়ন চাচ্ছেন। আমিও আওয়ামী লীগ থেকে তো মনোনয়ন চাচ্ছি। আমি খসরু ভাইয়ের আসনে চাচ্ছি। আমি কেন বিদ্রোহী হতে যাব। কেন আমি বিরোধী দলে যাব। এটা তো আমার প্রাপ্য। আমার স্বামী বলে গেছে এখানে কাজ করতে।’

মনোনয়নের বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার যেখানে যা দেয়ার দরকার সেখানে দিয়েছি। বাকিটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। এতে কারো হাত নেই। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জানে যে আব্দুল মতিন খসরুর স্ত্রী নির্বাচন করবে।’

সিলেট-৩: প্রয়াত মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর আসনে মনোনয়ন চান কি না- জানতে চাইলে তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমি মনোনয়ন চাইব। আমি রোজার মাসে এলাকায় গিয়েছিলাম। লোকজন এসে আমাকে খুব ধরছে, এই আসন থেকে আমি যেন দাঁড়াই (প্রার্থী হই)। তারা বলছেন, আমাদের মাথার ছায়া চলে গেছেন, আপনি আছেন, নির্বাচন করেন। আমারও ইচ্ছে, যেহেতু আমার স্বামীর অনেক অসমাপ্ত কাজ রয়েছে। যদি নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেন, আল্লাহর হুকুম হলে এই কাজগুলো ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারি। সেজন্য মনোনয়ন চাচ্ছি।’

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর কী কী অসম্পূর্ণ কাজ রয়েছে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক জিনিস আছে যার কিছুটা করা হয়েছে, কিছুটা বাকি আছে। এরকম যেগুলো রয়েছে সেগুলো।’

জীবিত থাকতে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী আপনাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসতে চেয়েছিছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে তার রাজনীতির সঙ্গেই আমি ছিলাম। প্রতিটি নির্বাচনে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। নির্বাচনের সময় ভোটের জন্য আমি নিজেও মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছিলাম। উনি থাকতে আমি রাজনীতি করব- এই ধরনের চিন্তা করি নাই। আল্লাহর হুকুমে উনি চলে গেছেন। আবার আমাকে জনগণ চাচ্ছে। সেজন্য আমি মনোনয়ন চাচ্ছি। কেউ যদি মনে করেন যে, আমি রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম না- এটা কোনো কথা নয়। আমি উনার ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক জীবনে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম।’

দলীয় মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করবেন কি না প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘না। এই ধরনের কোনো কিছু আমার মধ্যে নেই। নেত্রী খুশি হয়ে আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি দাঁড়াব, না হলে নেই।’

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুর পরে সিলেট-৩ আসনে এত প্রার্থী, এ বিষয়টি আপনাকে বিব্রত করছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে এরকম হয়ই। এটাকে আমি অস্বাভাবিক দেখি না। আপনারা উনার জানাযার ছবি দেখেছেন নিশ্চয়ই। ওটা থেকে বোঝা যায় তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন। এই করোনার সময়ও মানুষ সব কিছু ভুলে এত মানুষ তার জানাজায় উপস্থিত হয়েছেন। আমি মনে করি, উনাকে যেভাবে মানুষ ভালোবেসেছে, আমি যদি উনার জায়গায় দাঁড়াই, তারা আমাকেও ভালোবাসবে। অনেক ভোটারই বলছে, আপনি এখানে দাঁড়ান। আমরা আপনার জন্য আগের চেয়ে বেশি খাটব।’

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com