1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

হেলেনার ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পেয়েছে র‌্যাব

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১
  • ১০৬ বার দেখা হয়েছে

আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামে একটি সংগঠনের পোস্টারকে ঘিরে বিতর্ক তৈরির পর গ্রেপ্তার হওয়া আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রথমে সখ্যতা তৈরি করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। ব্লাকমেইলের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাকেই প্রয়োজন হয়েছে তাকেই তিনি ঘায়েল করেছেন। হেলেনার এসব অপকর্ম আরো গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে মামলার তদন্ত করতে চায় র‌্যাব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সায় পেলে যথাযথ উপায়ে মামলার তদন্তভার পাওয়ার আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির পদ খোয়ানো হেলেনা জাহাঙ্গীর গুলশান থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। রিমান্ডের প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলতে শুরু করেছেন হেলেনা। ইতোমধ্যে বেশকিছু বিস্ফোরক ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। যেসব বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে গুলশান থানা পুলিশের একটি সূত্র।

জানা গেছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলতে প্রথমে টার্গেট করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। এরপর তার সঙ্গে কৌশলে সখ্য গড়ে তুলতেন। সেই সখ্যের সুযোগ নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে তিনি কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নিতেন দাবি করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা সুনির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির জন্য থেমে থাকেননি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাকেই প্রয়োজন হয়েছে তাকে তিনি ঘায়েল করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন এবং সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন শুধু উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য।

এছাড়া জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে প্রথমে সখ্য তৈরি করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতেন হেলেনা। এছাড়া অবৈধ জয়যাত্রা আইপি টিভির মাধ্যমে দেশ-বিদেশে প্রতিনিধির মাধ্যমেও তিনি চাঁদাবাজি করেছেন। তার নিজস্ব সাইবার টিমও রয়েছে। কেউ তাকে নিয়ে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করলে তাদের ঘায়েল করার দায়িত্ব ছিল ওই সাইবার টিমের।

শনিবার দুপুরে র‌্যাব সদরদপ্তরে লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে জানান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রথমে সখ্যতা তৈরি করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। এরকম অনেকের কাছ থেকে টাকা

আদায় করার তথ্য আমরা পেয়েছি। এ অপকর্মে হেলেনা কখনো সুনির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির জন্য থেমে থাকেননি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে তার। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাকেই প্রয়োজন হয়েছে তাকে তিনি ঘায়েল করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন এবং সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন শুধু উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। আমাদের একটি মামলার কারণ এটাই।

তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন যা তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে, জনগণের মধ্যেও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন, র‌্যাব এই মামলাটির তদন্ত করবে তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে আমরা আবেদন করব। তবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে হবে।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী ১৯৯০ সাল থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে অন্যদের সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করে এখন পর্যন্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন। ২০১২ সাল থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। আমরা জানতে পেরেছি, গত দুই বছরে বিভিন্ন মাধ্যম এবং কথিত আইপি টিভি জয়যাত্রা টেলিভিশনে চাকরি দেয়ার কথা বলে, এজেন্সি দেয়ার কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা আদায় করেছেন তিনি। কারো কাছ থেকে ১০-২০ হাজার টাকা, আবার কারো কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। কী কারণে টাকা নিয়েছেন এবং কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে- এ বিষয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা। এসবের দায় অফিস স্টাফদের ওপর চাপিয়েছেন তিনি। বাসায় এবং অফিস থেকে যে পরিমাণ ভাউচার পাওয়া গেছে তা এখনো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। জয়যাত্রা টেলিভিশনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে অনেক প্রতিনিধিও এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

কমান্ডার মঈন বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর আমাদের জানিয়েছেন, তার ১৫ থেকে ১৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে তিনি জড়িত। বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি কিংবা ব্ল্যাকমেইল করে আদায় করা টাকাগুলো তিনি ফাউন্ডেশনে কাজে লাগাতেন। সুনামগঞ্জে তিনি ত্রাণ বিতরণ করায় স্থানীয়রা তাকে পল্লিমাতা উপাধি দিয়েছেন। ফাউন্ডেশনের নামে প্রবাসীদের কাছ থেকে অনেক টাকা এনেছেন। এগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। এছাড়া তার ফ্ল্যাট ও গাড়ির সংখ্যা কতগুলো সে বিষয়ে প্রকৃত কোনো তথ্য দিতে পারেনি। কখনো ৬টি গাড়ি, কখনো ৮টি গাড়ির কথা উল্লেখ করেন তিনি। মামলাটি যারা তদন্ত করবেন তারা এসব বিষয় খতিয়ে দেখবেন। তার আয়ের উৎস সম্পর্কে সিআইডি কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

জিজ্ঞাসাবাদে হেলেনা জাহাঙ্গীর র‌্যাবকে আরো জানান, সম্প্রতি তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে সমাজসেবক হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টায় ছিলেন। বেশ কয়েকবার তিনি নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। তিনি শুধু নিজের অবস্থান উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এধরনের অপপ্রয়াস ও অপতৎপরতা চালিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন দেশের মানুষ তাকে চিনবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি বক্তব্য উল্লেখ করে খন্দকার আল আমিন বলেন, বক্তব্যটি খুবই উদ্বেগজনক। কাউকে এভাবে হেয় প্রতিপন্নভাবে কথা বলা সমীচীন নয়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসা থেকে দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র‌্যাব। সিলগালা করে দেয়া হয় জয়যাত্রা টেলিভিশন। পরে শুক্রবার গুলশান থানায় দুটি ও পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। এরমধ্যে গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com