1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
করমুক্ত আয়সীমা হতে পারে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাচারের অর্থ ফেরাতে বড় বাধা ‘লেয়ারিং’ তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে মাঠে বিএনপি ঢাকা-দিল্লি বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ তিন বছর CA to unveil much-expected foundation stone of Kalurghat Bridge today NBR is split to broaden tax base, improve efficiency: govt তদন্ত প্রতিবেদন জমা হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ ♦ মানবতাবিরোধী অপরাধে প্ররোচনা ♦ সরাসরি হত্যার নির্দেশ ♦ শিশুদের টার্গেট করে হত্যা ♦ আহতদের চিকিৎসায় বাধা ♦ নিহতদের ময়নাতদন্তে বাধা নির্বাচনি তহবিল সংগ্রহের চাপে বাজেট জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। ২০২৫-২৬ বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পেলে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করে ইসি Govt abolishes NBR, splits it into two new revenue divisions Govt. issues gazette banning activities of AL

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা সমীপে এক অম্লান অভিজ্ঞতা

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১
  • ১০২ বার দেখা হয়েছে

ড. রফিকুল ইসলাম১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল হওয়ার পর ঘটনাটি ঘটেছিল। বঙ্গবন্ধু মুক্তি পেয়েছিলেন ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। তারপর চলছিল একের পর এক সংবর্ধনা। শুধু রাজনৈতিক বা ছাত্র সংগঠন নয়, সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও তাদের প্রিয় নেতার সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল। এ আয়োজনকারীদের মধ্যে কতিপয় ভোল পাল্টানো ব্যক্তিও ছিলেন। এ প্রসঙ্গে সবচেয়ে কৌতূহলোদ্দীপ্ত যে ঘটনাটি ঘটেছিল, তা নিম্নরূপ : ১৯৬৭ সালে রবীন্দ্র মৃত্যুবার্ষিকীর আগে পাকিস্তান জাতীয় সংসদের এক অধিবেশনে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিন বেতার ও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান এবং আমি সক্রিয় হয়ে ওঠি। আমাদের প্রয়াসে প্রায় তের শ বুদ্ধিজীবী এক বিবৃতির মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের ওই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

আমাদের বিরুদ্ধে এবং পাকিস্তান সরকারের ওই ঘোষণার সমর্থনে প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ড. হাসান জামান, ড. মোহর আলী প্রমুখ পাঁচজন শিক্ষক এবং পরে ঢাকা বেতার ও টেলিভিশনের ৪০ জন কর্মকর্তা ও শিল্পী এক বিবৃতি দেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পর কাগজে দেখলাম, এ ৪০ জনের অনেকে মিলে বঙ্গবন্ধুর সংবর্ধনার আয়োজন করেছে। এ সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি বাংলা বিভাগের তদানীন্তন ছাত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরদিনই সাক্ষাতের ব্যবস্থা করি।

আমি যথাসময় ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করি এবং ওই সংবর্ধনার আয়োজনকারীদের নামের তালিকা পত্রিকা থেকে বঙ্গবন্ধুকে দেখাই। আমি তাঁকে সংবর্ধনায় না যেতে অনুরোধ জানাই। বঙ্গবন্ধু তালিকায় স্থান পাওয়া দালাল শিল্পী সাহিত্যিকদের নাম দেখে অত্যন্ত বিস্মিত হন। কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলেন, ‘আমি কাল ঐ সংবর্ধনায় যাব, আপনিও যাবেন, মজা দেখবেন’। এরপর তিনি শেখ হাসিনাকে ডেকে বললেন, ‘তোমার স্যারকে তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যাও’। হাসিনা আমাকে ৩২ নম্বর বাড়ির বসার ঘর থেকে আরেকটি ঘরের ভিতর দিয়ে অন্দরমহলে নিয়ে গেলেন। ওই ঘরে সারি সারি চৌকি পাতা। হাসিনা তার মায়ের কাছে নিয়ে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। বেগম মুজিব অত্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে একটি চেয়ারে বসে ছিলেন। তাঁর সামনে একটি টেবিল। সেখানে নানারকম খাবার সাজানো। আমি বেগম মুজিবকে সালাম জানিয়ে তাঁর কথামতো টেবিলের ওপাশের চেয়ারে মুখোমুখি বসলাম। এই আমি প্রথম বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে সামনাসামনি দেখার ও আলাপ করার সুযোগ পেলাম। তাঁকে দেখে চার বছর আগে হারানো আমার মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। আমার মনে হলো তিনি একজন চিরন্তন মূর্তিময়ী ‘বাঙালি মা’। আমার দিকে তিনি স¯েœহে তাকিয়ে কুলশাদি জিজ্ঞেস করলেন এবং আমার বাড়ির খোঁজখবর নিলেন। আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনার ঘরে আসার সময় সারি সারি চৌকি দেখলাম, ওখানে কারা থাকেন?’ তিনি বললেন, ‘হাসুর বাবার মুক্তির পর থেকে বাংলাদেশের দূরদূরান্ত থেকে কর্মীরা ছুটে আসছেন। তাদের মধ্যে যারা রাত হয়ে যাওয়ার পর ফিরে যেতে পারছেন না তারা থেকে যাচ্ছেন, ফলে বাড়িটা একটা বাজারে পরিণত হয়েছে’।
তিনি এরপর আমার আপ্যায়নের দিকে মনোযোগ দিলেন। টেবিলের ওপর বিচিত্র সব খাবার। সবই ঘরে তৈরি পিঠা পায়েস। তিনি আমাকে নিজ হাতে প্লেটে তুলে দিতে লাগলেন এবং টিপে টিপে খাওয়ালেন আমার মায়েরই মতো। মজার বিষয় এই যে বঙ্গবন্ধুর মতো বঙ্গমাতাও আমাকে ‘আপনি’ সম্বোধনে কথা বলেছিলেন। কারণ আমি তাঁদের মেয়ের শিক্ষক। কিন্তু তাঁদের আচরণে আমার প্রতি যে ¯েœহ ঝরে পড়েছিল তা আমি প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেছিলাম। এমন সস্নেহ আচরণ আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি।

বেগম মুজিব আমাকে বললেন, ‘আপনি তো সব দেখে গেলেন, এর মধ্যেই হাসুকে লেখাপড়া করতে হয়, আপনি যদি ওর পড়াশোনায় একটু সাহায্য করেন তাহলে ভালো হয়’। আমি বললাম, ‘আপনি চিন্তা করবেন না, ওর প্রতি বিভাগের সব শিক্ষকই সহানুভূতিশীল।’ এরপর আমি তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। কিন্তু তাঁর স্মৃতি আজও অম্লান।

লেখক : জাতীয় অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সভাপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com