আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিতে হলফনামা জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। এখানে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সহায় সম্পত্তির দিকে দিকে মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী পরিচয় দেওয়া তালুকদার আব্দুল খালেক কোটিপতি হিসাবে অন্য সবার চেয়ে সম্পদের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছেন।
অন্যদিকে নগরীতে নিয়মিত ব্যক্তিগত দামি গাড়ীতে চলাচল করলেও কেবল লাখপতি হিসেবে তথ্য দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তাঁর ব্যবসা বন্ধ উল্লেখ করে আয়ের উৎস দেখানো হয়েছে ঘর ভাড়া।
দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের আয়ের উৎস মাছের ঘেরের ব্যবসা। যা থেকে বছরে মাত্র ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩০০ টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া কৃষি খাত থেকে তাঁর আয় এক লাখ ৩০ হাজার টাকা, বাড়ী ভাড়া থেকে আয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত ৮ লাখ ৫১ হাজার ৫৮০ এবং সঞ্চয় পত্র ৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৫০ টাকা, ব্যাংক থেকে সুদ পান ৯৯ হাজার ৮২৯ টাকা।
এই সংসদ সদস্য ভাতাসহ বছরে আয় করেন ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৬৭৫টাকা। তাঁর নিজের নগদ টাকা আছে ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫০ এবং স্ত্রীর নামে আছে দুই কোটি ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৭৯৪ টাকা। কোন বৈদেশিক মুদ্রা না থাকেলেও সাউথ বাংলা ব্যাংকের শেয়ার রয়েছে দুই কোটি। তিনি এই ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হলেও হলফনামায় তা উল্লেখ করা হয়নি।
তালুকদার আব্দুল খালেকের নিজের নামে সঞ্চয়পত্র দশ লাখ, এফডিআর দশ লাখ এবং পোস্টাল এফডিআর ১৮ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে সঞ্চয় পত্র ৪৫ লাখ, এফডিআর ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯৪১ টাকা। নিজের নামে দুটি গাড়ী রয়েছে যার দাম ৬৯ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। আর স্ত্রীর নামে একটি গাড়ী যার দাম ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার ৮৪৪ টাকা। সোনার পরিমাণ দেখানো হয়েছে ২৫ ভরি এবং ইলেকট্রিক সামগ্রির দাম দেখানো হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা।
পৈত্রিক সূত্রে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী কৃষি জমি পেয়েছেন ২৩ বিঘা, পাঁচতলা ভবন রয়েছে স্ত্রীর নামে। তালুকদার আব্দুল খালেকের মৎস্য ঘেরে বিনিয়োগ রয়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৯০০ টাকা। তিনি কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেননি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একাধিক মামলা থাকলেও তিনি সব মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানিয়েছেন, তাঁর ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন তাঁর আয়ের উৎস বাড়ী ভাড়া। এই খাত থেকে তিনি বছরে দুই লাখ ৪৩ হাজার টাকা আয় করেন। তাঁর স্ত্রীর বাৎসরিক উপার্জন দুই লাখ ৮২ হাজার টাকা। দুজনের নামে নগদ অর্থ আছে সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ। ব্যাংকে গচ্ছিত কোনো অর্থ যেমন নেই, ঋণও নেই। একটি টয়োটা মোটর গাড়ী দেখানো হলেও তার দাম উল্লেখ করা হয়নি।
নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নামে ২০ ভরি সোনার গয়না রয়েছে। বাড়িতে টেলিভিশন ও ফ্রিজ আছে একটি করে। যৌথ মালিকানায় একটি চারতলা দালান রয়েছে। অবশ্য এই বাড়ীটির বিপরীতে হাউস বিল্ডিং করপোরেশনে তিন লাখ ৮৫ হাজার ২৭১ টাকা ঋণ রয়েছে।
বিএনপির এই প্রার্থীর নামে মাত্র চারটি মামলা রয়েছে যার একটি তদন্তাধীন এবং বাকি তিনটির বিচারকাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া তিনি দুটি মামলা হতে অব্যাহতি পেয়েছেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।