1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৬:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
তদন্ত প্রতিবেদন জমা হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ ♦ মানবতাবিরোধী অপরাধে প্ররোচনা ♦ সরাসরি হত্যার নির্দেশ ♦ শিশুদের টার্গেট করে হত্যা ♦ আহতদের চিকিৎসায় বাধা ♦ নিহতদের ময়নাতদন্তে বাধা নির্বাচনি তহবিল সংগ্রহের চাপে বাজেট জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। ২০২৫-২৬ বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পেলে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করে ইসি Govt abolishes NBR, splits it into two new revenue divisions Govt. issues gazette banning activities of AL CA asks physicians to ensure healthcare for all আন্তর্জাতিক যে কারণে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলো ভারত-পাকিস্তান ৩ মিনিটের মাথায় ‘উধাও’ উপদেষ্টা মাহফুজের পোস্ট, কী লিখেছিলেন? পুঁজি সংকটে বিপর্যস্ত বেশ কয়েকটি ব্যাংক ট্রাম্পের ঘোষণা যুদ্ধবিরতিতে রাজি ভারত-পাকিস্তান ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় রাজি জেলেনস্কি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হেনস্তা শারীরিক সম্পর্কে না জড়ালে ভিডিও ছড়ানোর হুমকি দেন আজিম

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২
  • ২০৬ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় শুক্রবার রাতে। তারা র‌্যাবকে বলেছেন, তারা ছাত্রলীগের সমর্থক। গতকাল শনিবার চান্দগাঁও ক্যাম্পে র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।

 

এদিকে গ্রেপ্তার দুই ছাত্রকে গতকাল শনিবার আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আজিম হোসাইন (২৩), নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. নুরুল আবছার বাবু (২২), হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মো. নুর হোসেন শাওন (২২), দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মাসুদ রানা (২২) এবং হাটহাজারী কলেজের সাবেক ছাত্র সাইফুল ইসলাম। সাইফুলকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়। ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি আজিম হোসাইন ও নুরুল আবছার বাবুকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক বিশেষ সভায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় জড়িত দুই ছাত্রকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছি। এ বিষয়ে আমরা শিগগিরই লিখিত আকারে একটি বিজ্ঞপ্তি দেব। ’

র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছাত্রী হেনস্তার মামলা র‌্যাব ছায়াতদন্ত করছিল। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে আজিমকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের আটক করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার পাঁচজনের অভিভাবকই চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাস করেন। সেই সুবাদে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে দাপুটে প্রভাব বিস্তার করেন তারা।

র‌্যাব ঘটনার হোতা হিসেবে আজিমকে শনাক্ত করেছে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

ছাত্রী হেনস্তার ঘটনাটি ঘটে ১৭ জুলাই রাত সোয়া ১০টায়। ঘটনার শিকার ছাত্রী হাটহাজারী থানায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলা করার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। এরপর র‌্যাব শুক্রবার রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের হাটহাজারী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে র‌্যাব।

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, আসামিরা এখন থানাহাজতে আছেন। ছাত্রীর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাল (আজ) রবিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা র‌্যাবের কাছে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলেছেন, ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে তিনটি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে আজিম নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করেন। আর ভিকটিম ও তার বন্ধুর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও করেন বাবু ও শাওন।

ধারণ করা ভিডিও উদ্ধার সম্ভব হয়েছে কি না, জানতে চাইলে র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, তারা ভিডিও মুছে দিয়েছে। এখন মোবাইল ফোনসেটের ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে ভিডিও উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে হবে। তারা একটি ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য স্বীকার করলেও পদ-পদবি নেই বলে দাবি করেছেন। র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, ঘটনাটি আকস্মিকভাবে ঘটেছে এবং দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে ছয়জন ছিল। এক পর্যায়ে লক্ষ করেন, একজন ছেলে ও একজন মেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিকে যাচ্ছেন। এই সময় তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এক পর্যায়ে ছাত্রী ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রীর ছেলে বন্ধুর কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে এই ঘটনা ঘটান।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ভিডিও ধারণের পর আজিম হুমকি দেন, তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে না জড়ালে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন। ছাত্রী ও তার বন্ধুকে প্রায় এক ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। এখন ভিডিওগুলো কোথাও শেয়ার করা হয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে দুটি মোটরসাইকেল ঘটনায় ব্যবহৃত হয়েছে তার একটি শাওনের। অন্যটি সাইফুলের। ঘটনাটি ঘটেছে আজিমের বাসার অদূরে।

‘হেনস্তাকারীদের আজীবন বহিষ্কার’

ছাত্রীকে নিপীড়ন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় যেসব ছাত্র জড়িত তাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪তম সিনেট সভায় ৩১ নম্বর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ওয়াশিকা আয়েশা খানের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

সভায় উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, ‘শুক্রবার রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করেছে র‌্যাব। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুজন। এটা খুব লজ্জার সঙ্গে বলতে হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তাদের মতো করে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবে। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মতো করে ব্যবস্থা নেব। ’

১৭ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ তরুণের বিরুদ্ধে। সে সময় ওই ছাত্রীকে গাছে বেঁধে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয় এবং তার সঙ্গে থাকা বন্ধুটিকে মারধর করে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনতাই করা হয়। পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া জড়িত পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলাও করেন ওই ছাত্রী।

১৯ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সরব প্রতিবাদের পর নড়েচড়ে বসেছে চবি প্রশাসন। তবে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ঘটনা এবারই প্রথম নয়, আগের ঘটনাগুলোতেও অভিযুক্তদের বিচার করা হয়নি। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালীন ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর এ পর্যন্ত চারটি যৌন হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। কোনো ঘটনারই এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি।

গত ২৮ জুন শাটল ট্রেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। সকাল সোয়া ৭টার দিকে বটতলী রেলস্টেশনে এই ঘটনা ঘটে। পরে ওই ঘটনায় বাবুল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। বাবুলের বিরুদ্ধে মামলা চললেও বিচার সম্পন্ন হয়নি।

এর আগে গত ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস থেকে শহরগামী শাটল ট্রেনে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে দুই যুবক। ট্রেনটি ফতেয়াবাদ স্টেশনে পৌঁছলে দুই যুবক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ধস্তাধস্তি করে কোনো রকমে তিনি রক্ষা পান। এ ঘটনার তিন মাস পার হলেও কাউকে আটক করা হয়নি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com