শাহেদ চৌধুরী
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারকালে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবেন না প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরাও সরকারি সুবিধা গ্রহণ করবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শুক্রবার সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বলেছেন, তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারকালে সরকারের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই সংলাপে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমের সময় জাতীয় পতাকা ব্যবহার না করারও ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুক্রবারের সংলাপে অংশ নেওয়া কমপক্ষে তিনজন মন্ত্রীসহ কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, যুক্তফ্রন্টের সাত দফা দাবির অন্যতম হলো- সংসদ ভেঙে দেওয়া সম্ভব না হলে নিষ্ফ্ক্রিয় রেখে ভোটের মাঠে এমপি ও মন্ত্রীদের সরকারি সুবিধা না দেওয়া। সংলাপে এ নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনী প্রচারকালে তিনি নিজেও জাতীয় পতাকা ব্যবহার করবেন না। এমনকি সরকারি গাড়ি এবং গেস্টহাউসও ব্যবহার করবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সমকালকে জানিয়েছেন, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন- মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরাও তাদের নির্বাচনী এলাকায় সরকারের কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবেন না। তারা নিজেদের এলাকায় কোনো ধরনের প্রভাবও বিস্তার করতে পারবেন না। সেখানে তারা সরকারি বাড়ি ও গাড়ি ব্যবহার করবেন না। অর্থাৎ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ওই সময় নিজের নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশের আগেই তিনি সরকারের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ত্যাগ করতেন। ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার চালাতেন। আগামী নির্বাচনেও এমনটাই করবেন।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রচার কার্যক্রম চলাকালে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা তাদের নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় সরকারের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। ওই সময়ে কোনো প্রকল্প অনুমোদন করা হবে না বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।
সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তার সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড যোগ করতে পারবেন না। সেইসঙ্গে তিনি নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করতে পারবেন না। এমনকি এ উদ্দেশ্যে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না।