সরকার সাত দফা দাবি না মানলেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি জোট। একইসঙ্গে নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবি জানিয়ে আগামী সোমবার নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেবেন তারা। ‘নির্বাচনে অংশ নিলে’ নিবন্ধিত দলগুলো নিজস্ব প্রতীকে এবং অনিবন্ধিত দলগুলো জোটের প্রধান শরিক বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে জানিয়ে আজ রোববার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবে দলগুলো।
গতকাল শনিবার বিকেল ৫টা থেকে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি, ২০ দল এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পৃথক বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ এ সিদ্ধান্ত হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অবশ্য বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, আজ রোববার দুপুর ১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ড. কামাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আজ রোববার সকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা আইনজীবীরা সাক্ষাৎ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে দল ও জোটের সিদ্ধান্ত তাকে অবহিত করবেন। বৈঠকে দল ও জোটের বৈঠকে নির্বাচনে আসন বণ্টনের ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে সমন্বয়কারী করা হয়েছে। বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামী দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আজ রোববার মতামত জানাবে। নিবন্ধন হারানো জামায়াতের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন, না ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে লড়বেন, সে সিদ্ধান্তও জানা যাবে আজ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে গতকাল তিন দফা বৈঠক হয়। প্রথমে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত হয় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক। এর পর ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের বৈঠক। রাত সাড়ে ৮টা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক চলে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক : সূত্র জানায়, ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শীর্ষ নেতাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। এ সময় প্রত্যেক নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দেন। ঐক্যফ্রন্টের দেওয়া সাত দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়া যেতে পারে বলে মত দেন অধিকাংশ নেতা। এ বিষয়ে আজ সকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিল চেম্বারে বৈঠক করবেন স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা। আজ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের খসড়া তৈরি করতে জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও গণফোরাম যুগ্ম সম্পাদক আওম শফিকউল্লাহকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকের শুরুতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী স্টিয়ারিং কমিটিকে অবহিত করেন তিনি গতকাল সন্ধ্যায় বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলেন। বি. চৌধুরীকে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আসার জন্য আবারও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর জবাবে বি. চৌধুরী বলেছেন, তার নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের মনোনয়ন ফরম ইতিমধ্যে বিতরণ শুরু করেছেন। এ অবস্থায় তার পক্ষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করা সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে অন্যান্য নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চেয়েছিল, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো আরেকটি ওয়াকওভার চেয়েছিল। সেই সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না। তারা বলেন, নির্বাচনে যদি জোয়ার সৃষ্টি করা যায়, তাহলে সারাদেশে তাদের পক্ষে ফলাফল আসবে। এ জন্য তাদের বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। তবে বৈঠকে আসন বণ্টন ও নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছে, ২০ দলের বৈঠক হয়েছে। এরপর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আজ দুপুর ১টায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। এর আগে পৌনে ১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, মোকাব্বির খান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাহিদ উর রহমান, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন।
২০ দলের বৈঠক : সূত্র জানায়, সাত দফা দাবি আদায় না হলেও আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণে মত দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অধিকাংশ শরিক। তবে তিনটি দল ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে পাতানো নির্বাচনে’ অংশ নেওয়ার বিরোধিতা করেছে। ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে এমনই অবস্থান ছিল শরিক দলগুলোর। জোটের বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শরিক দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, গণতান্ত্রিক পন্থায় আইনের পথেই তাদের যেতে হবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করা এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ যদিও সাংবাদিকদের জানান, তাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেবে কি, নেবে না, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী দু’দিনের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে, তা সঠিক নয় দাবি করে অলি আহমদ বলেন, জোটের কোনো নেতা গণমাধ্যমকে বলেননি নির্বাচনে অংশ নেবেন। যদি কেউ বলেও থাকেন, তাহলে তিনি অনৈতিক কাজ করেছেন। তিনি জানান, ভোট পেছানোর দাবিতে ২০ দলের নিবন্ধিত দলগুলো আজ চিঠি দেবে নির্বাচন কমিশনকে।
অলি আহমদ আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি তাদের অগ্রাধিকারে রয়েছে। তিনি মুক্ত হলে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে। বিএনপি ও জোটের নেতাকর্মীদের এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ না করা পর্যন্ত ভোটে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিতে পারে না ২০ দলীয় জোট।
ইসির নিয়ম অনুযায়ী, আজকের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাতে হবে, কে কার সঙ্গে জোট করে ভোট করবে। এ বিষয়ে অলি আহমদ বলেন, যদি তারা নির্বাচনে অংশ নেন তাহলে অনেক শরিক দল নিজস্ব প্রতীকে ভোট করবে। আবার কেউ কেউ বিএনপির প্রতীকে ভোট করবে। অনেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি বাদে জোটের সাতটি নিবন্ধিত দলের পাঁচটিই ভোটে অংশ নেওয়ার পক্ষে মত দেয়। এ দলগুলোর বক্তব্য- এ ছাড়া পথ নেই। দলীয় নিবন্ধন রক্ষায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। বিজেপি ও জমিয়তে উলামায়ের প্রতিনিধিরা মত দেন, সুষ্ঠু ভোটের নিশ্চয়তা ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিলে বিশেষ লাভ হবে না। পাতানো ভোট হলে অংশ নেওয়া উচিত নয়।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে নীরব ছিল জামায়াত। দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জোটের বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছে তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাবেন। দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আজ রোববার বিএনপি মহাসচিব ও এলডিপি সভাপতিকে দলের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
খেলাফতে মজলিশের আমির মাওলানা মুহম্মদ ইসহাক সমকালকে বলেন, বৈঠকে অধিকাংশ দলেরই মত ছিল ভোটে অংশ নেওয়ার পক্ষে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও দু-তিনদিন সময় লাগতে পারে। আজ রোববার ২০ দলীয় জোটের আটটি নিবন্ধিত দল পুনঃতফসিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবে। মনোনয়নপত্র দাখিল, প্রত্যাহার ও ভোটের তারিখ পেছানোর দাবি জানানো হবে।
বৈঠকে খেলাফতের অবস্থান সম্পর্কে মাওলানা ইসহাক বলেন, জোটের সিদ্ধান্তে তারা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। আগামীতেও ভোট বর্জন করলে দলের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে। নিবন্ধন রক্ষায় ভোটে অংশ নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি। আরও অনেকের একই অবস্থান ছিল।
জোটের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবদুল কাদের, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নীতিনির্ধারক নেতারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নির্বাচনের যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মতামত দেন। তারা কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং লন্ডনে অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোভাব কি- তা জানতে চান দলের মহাসচিবের কাছে। জবাবে মহাসচিব বলেন, সাত দফা দাবি আদায়ের কৌশল হিসেবে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা, ২০ দলীয় শীর্ষ নেতা এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে যে সিদ্ধান্ত নেবেন তার সঙ্গে তারাও একমত থাকবেন। এ বিষয়ে সম্প্রতি কারাগারে বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে এবং টেলিফোনে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপি নীতিনির্ধারক নেতারা বলেন, বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। এমন আর ভুল করা যাবে না। দলের চেয়ারপারসনকে মুক্ত করাসহ সাত দফা দাবি আদায়ে এই নির্বাচন আন্দোলনের অংশ হতে পারে। দু’একজন নেতা খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে গেলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভালোভাবে নেবেন কি না- এ প্রশ্ন রাখেন। জবাবে সিনিয়র নেতারা বলেন, তৃণমূল নেতাদের পরিস্থিতি বোঝাতে হবে এবং চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এ বিষয়ে সম্মতি আছে বলেও তাদের জানাতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৪ অক্টোবর সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এরপর ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দাবি ও লক্ষ্য তুলে ধরে। তবে সভা-সমাবেশে বাধা না দেওয়া, বিদেশি পর্যবেক্ষক আসার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া গায়েবি মামলার তালিকা দিলে তদন্ত করে দেখারও আশ্বাস দেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় দফা সংলাপে সংসদ ভেঙে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ১০ জন উপদেষ্টা নিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের ফর্মুলা তুলে ধরে ঐক্যফ্রন্ট। তবে সংবিধানের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয় বলে নাকচ করে দেন প্রধানমন্ত্রী।