সারাদেশের বিএনপি নেতা-কর্মীরা এখন ঢাকায়। পুলিশের তাড়া খেতে খেতে অস্থির-ক্লান্ত রাজনীতির কর্মীরা ভোটকে উপলক্ষ করে যেন বহুদিন পর একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন। নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসছে মিছিলের পর মিছিল। সেখানে তিল ধারণের ঠাই নেই। শুধু মানুষ আর মানুষ। প্রার্থীরা শোডাউনের প্রতিযোগিতা করছেন। নিজ নিজ এলাকার লোকজনকে নিয়ে এসেছেন গাড়ী বহর করে। বিশাল বিশাল মিছিল আসছে।
শ্লোগান আর ঢোল ঢোলকের বাদ্য-বাজনায় মুখরিত চারপাশ। ব্যানার-ফেস্টুন উঁচিয়ে, নেচে-গেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আনন্দ-উল্লাস। উৎসবের আমেজ থইথই করছে। মিছিলে নেতাকর্মীদের হাতে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছবিসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। বেগম জিয়ার মুক্তির দাবীতে শ্লোগান। সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্রও। এমন উত্তাল দৃশ্য বিএনপিতে গত এক যুগেও দেখা যায়নি। মামলা হামলা গ্রেফতারে নাস্তানাবুদ বিএনপির নেতাকর্মীরা। মামলা নেই এমন একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।বেগম জিয়ার নামেই আছে ৩৬ মামলা। তারেক রহমানের নামে ১১০ । মির্জা ফখরুলের নামে ৮৭ । মামলা ও গ্রেফতারে জেরবার বিএনপিতে উৎফুল্লতা চলছে গত দুইদিন। সারাদেশে গ্রেফতার গায়েবী মামলা গতকাল থেকে কমেছে।অনেকের সাথে কথা বলে জানাগেলো এই তথ্য। ফকিরাপুল মোড় থেকে নাইটেঙ্গেল মোড় পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে মিছিল- শোডাউন দিচ্ছেন কর্মী সমর্থকরা আর নেতারা পার্টি অফিসের ভেতরে যাচ্ছেন ফরম কিনতে। নেতাকর্মীদের পদভারে সেখানে যানচলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার চলছ দ্বিতীয় দিনের মতো মনোনয়ন ফরম বিক্রি। প্রথম দিন সোমবার (১২ নভেম্বর) প্রার্থীদের মধ্যে ১ হাজার ৩২৬টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি শেষ করেছে বিএনপি। আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে রাত ৮টায় পর্যন্ত চলবে ফরম বিক্রি ও জমা। প্রত্যেক বিভাগের প্রার্থীদের সুবিধার জন্যে আলাদা আলাদা বুথের ব্যবস্থা করেছে বিএনপি। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যক্তিগত বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, টেলিফোন ইত্যাদি বিল পরিশোধ করতে দলের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সাদা পোশাকের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক পুলিশকে দেখা গেলো নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। পুলিশের সামনে হাজার হাজার নেতাকর্মী যাদের প্রত্যেকের নামেই অনেকগুলো করে মামলা, বেশীর ভাগই ওয়ারেন্ট ইস্যু করা- কিন্তু তাদের কাউকেই আটক করতে পারছেন না। চেয়ে চেয়ে কেবলই দেখছেন।
কারণ পুলিশ সদর দফতর থেকে সোমবার সব জেলার পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে: ‘রাজনৈতিক মামলায় ধরপাকড় নয়। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বাছাই করুন।’