1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন

ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ১০৫ বার দেখা হয়েছে

ব্যাংক ঋণখেলাপি নির্ণয়ে তিনটি ধাপ রয়েছে। প্রথম পর্যায়ের খেলাপির আঘাত সহনীয়। বেশির ভাগ ব্যাংকের এ আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা আছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের খেলাপির আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা আছে চার-তৃতীয়াংশ ব্যাংকের।

তবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তৃতীয় পর্যায়ের খেলাপির। এটি সহ্যের ক্ষমতা কম ব্যাংককেরই আছে। তবে ঋণখেলাপি এবং জালিয়াতির জন্য বিভিন্ন সময় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হলেও তা মানতে নারাজ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা (এমডি)।

তাদের মতে, ব্যাংকিং খাতে আজকের নাজুক পরিস্থিতির জন্য শুধু এমডি বা ব্যাংকার দায়ী নন, এর জন্য কিছু খারাপ ঋণগ্রহীতা এবং ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা দায়ী। বুধবার রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তারা একথা বলেন।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সরকারি-বেসরকারি ৩৭টি ব্যাংকের এমডি উপস্থিত ছিলেন।

এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ভালোভাবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা ব্যাংকের দায়িত্ব। সে কাজটা ব্যাংকগুলো দক্ষতার সঙ্গে করছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতে ছোট ধরনের অভিঘাত এলে তা সহ্য করার ক্ষমতা বেশির ভাগ ব্যাংকের আছে। মাঝারি মানের অভিঘাত সহ্য করার ক্ষমতা আছে ৭৫ শতাংশ ব্যাংকের।

ফলে ব্যাংকগুলো ঝুঁকি নিরসনে প্রস্তুত। তিনি বলেন, কোনো একটা ঋণ খারাপ হলেই ব্যাংকারদের দায়ী করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে তাদের কিছু করার থাকে না। কিছু খারাপ ঋণগ্রহীতা এবং ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কারণে ব্যাংক বেশি সমস্যায় পড়ে।

এবিবির চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কাজ করতে গিয়ে কিছু ভুল হতে পারে। তবে এত কিছুর পরও টাকা রাখার আস্থার জায়গা ব্যাংক। ব্যাংক খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

তাই সব সময় শুধু নেতিবাচক দিক তুলে ধরলে ব্যাংকাররা মানসিক চাপে থাকেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যাংকাররা ফেরেশতা নন। তাদের ভুল হতে পারে। কিন্তু শুধু সমস্যা নিয়ে কথা বললে হবে না। নতুন বছরে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়ন (আন্তর্জাতিক মানদণ্ড), ঋণ আমানত অনুপাত নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ব্যাংক খাতের ইতিবাচক বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সারা দেশে ১০ হাজারের বেশি শাখার মাধ্যমে ব্যাংক সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন উপায়ে ব্যাংকিং সেবা দেয়া হচ্ছে। ব্যাংক খাতে ১০ লাখ কোটি টাকার বেশি আমানত এবং ৮ লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে।

হঠাৎ ডাকা সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা সিপিডির বিপক্ষে সংবাদ সম্মেলন নয়। কাকতালীয়ভাবে সময়টা মিলে গেছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান বলেন, ব্যাংকাররা দেশের জন্য কাজ করছেন।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ব্যাংকগুলোর অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ২২ হাজার কোটি টাকা খারাপ হতেই পারে। শুধু নেতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা করলে ব্যাংকাররা নিরুৎসাহিত হন।

সিটি ব্যাংকের এমডি সোহেল আরকে হুসেইন বলেন, ব্যাংক খাত ভালো করছে বলেই অনেক বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। শুধু নেতিবাচক দিক নিয়ে সমালোচনা করলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে ইতিবাচক দিকগুলোও সামনে আনতে হবে।

ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরফান আলী বলেন, অধিকাংশ এমডির ৩০-৩৫ বছরের ব্যাংকিং ক্যারিয়ার। তাদের নিয়ে ঢালাওভাবে সমালোচনা করলে খারাপ লাগে। তিনি বলেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এজেন্ট ব্যাংকিং, আরটিজিএসসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দ্রুত ও আধুনিক সেবা দেয়া হচ্ছে। একটি সময় ব্যাংকগুলো কোনো ধরনের চার্জ ছাড়াই ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ সেবা দিত। এখন বিনা খরচে ৬৬ দশমিক ৬০ শতাংশ সেবা দেয়া হয়।

সোনালী ব্যাংকের এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটা শিল্প করার পর বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ পাওয়ার জন্য মাসের পর মাস বসে থাকতে হয়। কিন্তু সুদ আরোপ থেমে থাকে না। ভাত খেলে কিছু ভাত পড়বে। বর্তমানে ৮ লাখ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা দেখলে হবে না।

অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, কিছু সমস্যা থাকতে পারে। তবে উন্নয়ন হচ্ছে। নিজেদের সক্ষমতায় আমরা পদ্মা সেতু করছি। ব্যাংক খাত নিয়ে একটা নেতিবাচক মন্তব্যের কারণে এলসির খরচ বেড়ে যায়।

ফলে শুধু নেতিবাচক সমালোচনা না করে গঠনমূলক সমালোচনা করা উচিত। কৃষি ব্যাংকের এমডি আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, অনেক লোক এখন ব্যাংকিং সেবার আওতায় এসেছেন।

শুধু কালোকে কালো না বলে সাদাকেও সাদা বলতে হবে। আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি শাহ এ সারওয়ার বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়েছে। আর এ উন্নয়নের মূল সহযোগী শক্তি ব্যাংক। শুধু নেতিবাচক দিকগুলো সামনে আনলে হবে না।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এমডি মাহবুব-উল-আলম বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত গড়ে দিয়েছে ব্যাংক খাত। ব্যাংকগুলো শুধু অর্থায়ন করছে না বরং একজন উদ্যোক্তার ঝুঁকির অংশীদার হচ্ছে।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, বিশ্বের মধ্যে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সফল দুটি দেশের একটি বাংলাদেশ। আরেকটি ব্রাজিল। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়েও বাংলাদেশ ও কেনিয়া সফল হয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের এমডি এহসান খসরু বলেন, ঋণ বিতরণ করলে খেলাপি থাকবেই।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com