নিজস্ব প্রতিবেদকপ্রতারণার ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ীদের ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মশিউর রহমান খান ওরফে বাবু নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৯২টি মামলা থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, মশিউর রহমান সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের অন্যতম হোতা। দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আসামি মশিউর রহমান।
প্রতারণার মাধ্যমে কীভাবে ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, সে ব্যাপারে সিআইডির উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শেখ ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, আসামি মশিউর রহমানের বাড়ি গোপালগঞ্জ। গুগলসহ অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে মশিউর রহমানের সহযোগীরা।
পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, ডাল, তেল, লবণসহ বিবিধ পণ্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে তাঁর সহযোগীরা যোগাযোগ করেন। সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের পেশাদারি আচরণে তাঁদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ধরতে পারেন না ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। যেকোনো পণ্য কেনার পর তার ১০ থেকে ৩০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করতেন মশিউর রহমান। বাকি ৭০ শতাংশ মূল্য চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতেন।
সংবাদ সম্মেলন সিআইডির কর্মকর্তারা।
পরে ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন, মশিউর রহমান রহমান যে চেক দিয়েছেন, সেই হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ থাকে না। এরপর দিনের পর দিন টাকা না দিয়ে নানাভাবে প্রতারিত করেন মশিউর রহমান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা শেখ ওমর ফারুক বলেন, মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তাঁদের কাছে ১০০ জনের মতো ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন। দিন দিন এই অভিযোগকারীর সংখ্যা বাড়ছে। সিআইডি কার্যালয়ে প্রতারিত শতাধিক ব্যবসায়ী আজ হাজির ছিলেন। মশিউর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
গাজীপুরের আতিকুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, মশিউর রহমানের কোম্পানি তাঁর কাছ থেকে গার্মেন্টসসামগ্রী কেনে। মাল বুঝে নিলেও আর কোনো টাকা দিচ্ছেন না। চেক দিয়েছেন কিন্তু সেই চেকে টাকা নেই। কয়েক বছর ধরে তিনি ঘুরছেন।
সিআইডি কর্মকর্তা শেখ ওমর ফারুক জানান, প্রতারণার মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মশিউর রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার মো. খালিদুল হক হাওলাদার, মোহাম্মদ সাইদুর রহমান খান, সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান।