চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা চুয়াডাঙ্গা নোয়াখালী বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমনের দ্রুত ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বেশিরভাগ জেলাতেই আইসিইউ সুবিধা নাই অথবা একেবারেই অপ্রতুল। তাই জেলাগুলোতে বিপর্যয় ঠেকাতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের যোগান বাড়ানোসহ বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ, সচেতনতা কর্মসূচি বাড়ানো ও কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ।
রোববার (৬ জুন) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাতক্ষীরা চুয়াডাঙ্গা নোয়াখালী বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরা জেলায় সংক্রমণের দ্রুত ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা জানি বেশিরভাগ জেলাতেই আইসিইউ সুবিধা নাই অথবা একেবারেই অপ্রতুল। এ অবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় ঠেকাতে আশু পদক্ষেপ প্রয়োজন।
১। সব জেলায় ব্যাপকভাবে সচেতনতা কর্মসূচি বাড়াতে হবে যাতে মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে এবং বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেয়।
২। রাস্তাঘাটে মাস্ক ব্যবহার ছাড়া কেউ বের হলে তাদের জন্য শাস্তি কঠোর করতে হবে।
৩। দরিদ্র জনগণ যাতে মাস্ক ব্যবহার করতে পারে এবং হাত ধরতে পারে সেজন্য তাদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করতে হবে অনতিবিলম্বে।
৪। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য প্রচারণা চালাতে হবে।
৫। সংক্রমণ বাড়ছে এমন জেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের যোগান বাড়াতে হবে এবং দ্রুততার সাথে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম চালু করতে হবে।
৬। বিভিন্ন এলাকায় অক্সিজেন সাপ্লাই বাড়ানোর জন্য অক্সিজেন উৎপাদনে সক্ষম শিল্প কলকারখানাকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৭। সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি যেসব জেলায় সেখানে কঠোর লকডাউনের প্রয়োজন যেহেতু হতে পারে তাই দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের সাহায্যের জন্য প্রস্তুতিমূলক এখনই সেসব জেলায় পৌঁছাতে হবে এবং ক্যাশ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে এখনই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের নিকট সুস্পষ্ট নির্দেশনা যাওয়া দরকার।
৮। সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় করোনা স্বাস্থ্য গাইডলাইন মেনে চলার ব্যাপারে মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি চালাতে হবে।
৯। ‘গ্রামের মানুষের করোনা হয় না, কিংবা গরিবের করোনা হয় না’-এই ধরনের ধারণা বদলানো দরকার। আমরা নিজেরাও আমাদের আত্মীয়-স্বজন যারা বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করছেন তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পারি।
১০। যেসব জেলায় এখনো ছড়ায়নি, সেখানেও স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচারণা চালাতে হবে এবং অক্সিজেন সরবরাহ ও আইসিইউ প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে।
১১। যতদিন দেশের অধিকাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন এর আওতায় না আনা যাচ্ছে, ততদিন স্বাস্থ্য সতর্কতাই পারে আমাদেরকে নিরাপদ রাখতে। তাই আসুন নিজেরা মাস্ক পরি, অন্যকে মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে সচেতন করি। মাস্ক না পরার মধ্যে কোন বীরত্ব নাই, সেটা বোকামি।