1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ভারতের ওপর ৫০% ‘শুল্কবোঝা’ শুরু আজ থেকে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি। সামিট কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ১০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তদন্তের আওতায় ব্যাংক খাত ১৫ বছরের সব গভর্নর ডেপুটি গভর্নর বিএফআইইউপ্রধান সরকারি ও বেসরকারি ২৪ ব্যাংকের সব চেয়ারম্যান, এমডি ও পরিচালকের সম্পদের তদন্তে দুদক ‘‎লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা, আবারও শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ শুল্কসুবিধার পোশাক অর্ডারে তিন চ্যালেঞ্জ BNP suspends Fazlur Rahman’s post for three months Ducsu VP candidate Jalal expelled after stabbing roommate at Mohsin Hall Jalal countered the accusation on social media, posting photos of his own injuries and alleging that Rabiul attacked him Govt fast-tracks textbook printing for 2026 academic session SC to hear review petitions on caretaker government reinstatement on Wednesday Eight amicus curiae had earlier given opinions on the system, with five supporting the caretaker government and three proposing reforms or opposing it.

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা বাগান থেকেই বছরে আয় ৫০ লাখ টাকা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১
  • ৪৭২ বার দেখা হয়েছে

আসিফুর রহমান সাগর ও তন্ময় ভৌমিক

আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ধরনটাই চাকরিমুখী। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মা-বাবার প্রত্যাশা থাকে সন্তানরা লেখাপড়া শেষ করে ভালো কোনো চাকরি করবে। আর যে পড়াশোনা করছে তারও লক্ষ্য থাকে চাকরি। পড়াশোনা শেষে নিজে উদ্যোক্তা হবে, বিশেষ করে কৃষিকাজে যুক্ত হবে, এমন ধ্যানধারণা এখনো অনেকের মধ্যেই বিরল। নওগাঁর সোহেল রানা এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে, সমন্বিত বাগান গড়ে তোলেন তিনি। দেশের বাজার ছাড়িয়ে এখন যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করছেন নিজের কৃষি খামারের ‘ব্যানানা’ আম ও ‘আম্রপালি’ আম। বাগান থেকে বছরে আয় করছেন প্রায় ৫০ লাখ টাকা। তার বাগানে বর্তমানে আম, বরই, পেয়েরা, বিভিন্ন জাতের মসলা, ফুলসহ প্রায় ৩০০ জাতের গাছ রয়েছে। নওগাঁয় অনেক তরুণ তাকে অনুসরণ করে তৈরি করেছেন এই রকম বাগান। তারাও দেখেছেন সাফল্যের মুখ।

সোহেল রানা বলেন, উচ্চশিক্ষা শেষে কৃষিতে উদ্যোগ নেওয়ায় শুরুতে মানুষ হাসাহাসি করলেও এখন আমাদের খামার দেখে অনেক তরুণ অনুপ্রাণিত হয়ে, পরামর্শ নিয়ে কৃষি কাজে এগিয়ে আসছেন। শিক্ষিত তরুণরা কৃষিতে এলে এই খাত আরো অনেক সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন তিনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান নিয়ে মাস্টার্স শেষ করে সোহেল রানা ঢাকায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সাংবাদিকতা করেন কিছু দিন। এরপর ২০১৫ সালে গ্রামে ফিরে গিয়ে ছোট ভাই আব্দুল বারীকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের ১২ বিঘা জমিতে শুরু করেন ‘রূপগ্রাম এগ্রো ফার্ম’ নামে সমন্বিত কৃষি খামার। মাত্র দুই জন স্থায়ী কর্মী নিয়ে খামার শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে যান সোহেল। এখন প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে বিস্তৃত তার এগ্রো ফার্ম।

ব্যানানা ম্যাংগো বা কলা আম

রূপগ্রাম এগ্রো ফার্মের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২০১৮ সালে সাপাহার গোডাউনপাড়া এলাকায় ৭০ বিঘা জমি লিজ নেন সোহেল। শুরু করেন ‘বরেন্দ্র এগ্রো পার্ক’ নামে আধুনিক সমন্বিত কৃষি খামার ও এগ্রো ট্যুরিজম কেন্দ্র। তার সেই খামার ভিনদেশি উচ্চমূল্যের নানা ফল উত্পাদন করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে বড় অবদান রাখছেন। এছাড়া দেশি, বিদেশি ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে তা সংরক্ষণের পাশাপাশি পাখির নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তুলতে কাজ করছেন তিনি। কৃষির সব শাখার সমন্বয়ে ব্যাপকভাবে কৃষি পর্যটন উন্নয়নে কাজ করছেন সোহেল রানা।

নানা বয়সি শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ আধুনিক কৃষি বিষয়ে বাস্তব ধারণা পাচ্ছেন বরেন্দ্র এগ্রো পার্কে এসে। এছাড়া আলাদাভাবেও তিনি তিন জায়গায় যথাক্রমে ৩০ বিঘা, আট বিঘা ও ১২ বিঘার আমবাগান করেছেন।

হঠাৎ কেন কৃষির সঙ্গে নিজেকে জড়ালেন? উত্তরে সোহেল জানান, গাছপালা, বাগান করা নিয়ে তার বাবার প্রচুর আগ্রহ ছিল। তিনি বলেন, ‘বাবাকে দেখতাম হাট থেকে এবং বৃক্ষমেলা থেকে এমন কি নতুন কোথাও বেড়াতে গেলে সেখান থেকেও বিভিন্ন গাছের চারা কিনে এনে বাড়িতে লাগাতেন। এসব দেখে আমারও গাছ ও বাগানের প্রতি ভালবাসা তৈরি হয় ছোটবেলায়।’ প্রধানত বাবার উত্সাহেই তিনি কৃষিকাজে আগ্রহী হয়ে ওঠেন বলে জানান সোহেল।

আম্রপালি আমের নামকরণ যেভাবে হলো – Engineer’s Diary

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? এ প্রশ্নের জবাবে সোহেল রানা বললেন, ফল উত্পাদন ও রফতানির পাশাপাশি এগ্রো ট্যুরিজম বিকাশে বিশাল উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, এখানে দর্শনার্থী যারা আসেন তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে বাগানে হেঁটে নানা ফলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন এ জন্য মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী রাস্তা তৈরি করে আলাদা আলাদা প্লট তৈরি করা হয়েছে। এখানে ট্যুরিস্ট এসে নির্ধারিত ফি দিয়ে গাছ থেকে নিজ হাতে ফল পেড়ে খেতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় মৌসুমি ফল পছন্দ করে সংগ্রহ করতে পারবেন। ছোট শিশু ও শিক্ষার্থীরা ফল দেখে গাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। সেইভাবে গড়ে তোলার প্রত্যাশার কথা জানালেন সোহেল।

যুক্তরাজ্যের বাজারে সোহেলের ‘ব্যানানা’ ও ‘আম্রপালি’ আম

বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের বাগানে বারির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে ‘গ্লোবাল গ্যাপ’ অনুসরণ করে উত্পাদিত আম্রপালি আম গত জুন মাসে যুক্তরাজ্যে সফলভাবে রপ্তানি করেছেন সোহেল রানা। ইতিমধ্যে আড়াই টন আম বিলেতের বাজারে গেছে। আমের গুণমানে সন্তুষ্ট হওয়ায় ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্ডার পাচ্ছেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার আম্রপালির পর যুক্তরাজ্যের বাজারে ৫০০ কেজি ‘ব্যানানা’ আম রফতানি করেছেন সোহেল। তিনি আশা করছেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ১৫ টন আম রপ্তানি করতে পারবেন। সাপাহার উপজেলা কৃষি অফিস এক্ষেত্রে তাকে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে। এছাড়া সাপাহারে বেসরকারি সংস্থা ‘ঘাসফুল’ বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পিকেএসএফ-এর সহায়তায় নিরাপদ আম উত্পাদনে এসইপি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে।

সমন্বিত কৃষি খামার ‘রূপগ্রাম এগ্রো ফার্ম’

রূপগ্রাম খাড়িপাড়া এলাকায় সোহেল ৩০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘রূপগ্রাম এগ্রো ফার্ম’। এখানে আম, লিচু, মাল্টা, ড্রাগন, থাই পেয়ারা, কদবেল, লেবু, কলা, ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারিকেল চাষ হচ্ছে। রয়েছে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, দেশি মুরগির খামার। এছাড়া এখানে তুলসি, বাসক, নিশিন্দা, অ্যালোভেরা, কুসুম, পারুল, বিষজারণ, নিম, সোনালু, যষ্ঠিমধু, দইগোটা, হরিতকি, বহেড়া, আমলকি, শতমূলসহ নানা প্রজাতির ওষুধি গাছ রয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন দেশি গাছ সংরক্ষণ ছাড়াও এখানে প্রায় ৩০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। খামারের তিনটি পুকুরে চাষ হচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ। রয়েছে কবুতরসহ বাহারি পাখি।

আরও পড়ুন:
সন্তানরা ঘরে: অসুস্থ বাবাকে ফেলে রেখেছে বাড়ির উঠানে

‘বরেন্দ্র এগ্রো পার্ক’ গড়ে তোলা : রূপগ্রাম এগ্রো ফার্মের চার বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সোহেল রানা নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে প্রায় ৭০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলেন বরেন্দ্র এগ্রো পার্ক। এখানে বাণিজ্যিক ফল উত্পাদনের জন্য লাগানো হয়েছে গৌড়মতি, বারি-৪, আম্র্রপালি, ব্যানানা, সূর্যডিম, বারি-১১, বারি মাল্টা-১ জাতের আম। খাটো জাতের নারিকেল, অ্যাভোকাডো, ড্রাগন ফল, লংগান, ডুমুর, মালবেরি, বলসুন্দরী ও কাশ্মিরী আপেল কুল, পার্সিমন, থাই পেয়ারা।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com