1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সচিবালয়ে আগুন: ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত নতুন বছরে আলোচনায় থাকবে যেসব উদ্ভাবন উইকিপিডিয়া কীভাবে পরিচালিত হয়, কতটা নির্ভরযোগ্য এর তথ্য? এক্সক্লুসিভ কাটা-ছেঁড়া ছাড়ছে না ড্যাপকে সচিবালয়ে লাগা আগুন ১০ ঘণ্টা পর পুরোপুরি নিভল প্রাণঘাতী কমিয়ে শর্ট ব্যারেল অস্ত্র তিন বিভাগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির আভাস জাহাজে ৭ খুন: লাশ নিতে স্বজনদের ভিড়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন ৪৩ বিলিয়নের চাপে দেশ ♦ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রকল্পে বিদেশি ঋণ কিস্তি পরিশোধের ঝুঁকি ♦ অন্তর্বর্তী সরকারকে পরিশোধ করতে হবে ২.৬ বিলিয়ন, বাকি দায় যাবে নির্বাচিত সরকারের ঘাড়ে Khulna-Dhaka train services via Padma Bridge begin officially

ভ্যাটের ৪৯ কোটি টাকা দারাজের ‘পকেটে’

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১
  • ১৩২ বার দেখা হয়েছে

রহমত রহমান: দেশের বহুজাতিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেড’। আলিবাবা গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষত অনলাইনে পণ্য বিক্রয় ও সেবা প্রদানের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট পরিশোধ করেনি। বরং তা ঢুকেছে কোম্পানির পকেটে।

দারাজ একটি কোম্পানি। ফলে প্রতিষ্ঠানের সেবা ক্রয়ের বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে ভ্যাট পরিশোধের কথা। কিন্তু তা করেনি কোম্পানিটি। দুটি খাতে সুদসহ প্রায় ৪৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন ও মামলা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (উত্তর)।

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানকে দাবিনামা সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জবাব দিতে সময় নেয়া হয়েছে। ভ্যাট ফাঁকি রোধে দারাজকে নজরদারিতে রেখেছে কমিশনারেট। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর সূত্রমতে, দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে পণ্য বিক্রয়, সেবা প্রদান এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বা কেনাকাটার বিপরীতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পায় এনবিআর। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (উত্তর)-কে নির্দেশ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম ও ভ্যাট ফাঁকির উদ্ঘাটনে টিম গঠন করা হয়। গঠিত টিম ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর দারাজের প্রধান কার্যালয়ে (আসফিয়া টাওয়ার, হাউস-৭৬, রোড-১, ব্লক-ই, বনানী) অভিযান চালায়।

অভিযানের সময় প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মাসিক ট্রায়াল ব্যালান্স, চার্ট অব অ্যাকাউন্টস, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মাসিক বিক্রয় বিবরণী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত কমিশন রিপোর্ট, ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মাসিক বিপণন খরচের বিবরণী, মাসিক দাখিলপত্র, কমিশন হারের কপিসহ প্রয়োজনীয় দলিলাদি জব্দ করা হয়। পরে তা পর্যালোচনা করে বিপুল পরিমাণ ফাঁকি উদ্ঘাটন করা হয়। পরে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মামলার প্রতিবেদনে বলা হয়, দারাজ অনলাইনে পণ্য বিক্রয় ও সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ভ্যাট পরিশোধ করেনি। প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র অনুযায়ী, দাখিলপত্রে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মূসক বা ভ্যাট আরোপযোগ্য সেবা প্রদর্শন করেনি। এক্ষেত্রে ‘পরিকল্পিতভাবে’ প্রতিষ্ঠানটি ৫ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৫ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সেবা ক্রয়ের বিপরীতে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ২৬ কোটি ২৩ লাখ ২৮ হাজার ৮৯৯ টাকা উৎসে ভ্যাট পরিশোধ না করে ফাঁকি দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রযোজ্য উৎসে মূসক বা ভ্যাট দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৫৮ টাকা। যার মধ্যে মাত্র ৪ কোটি ২৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৪ টাকা পরিশোধ করেছে। বাকি ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৪ টাকা পরিশোধ করেনি। ভ্যাট আইন অনুযায়ী, যার ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ ১৪ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ৯৩৭ টাকা। সুদসহ উৎসে মূসক ফাঁকির পরিমাণ ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ২৩ হাজার ৪৩১ টাকা।

প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অপরিশোধিত ভ্যাট বিষয়ে বলা হয়েছে, দারাজ ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত অনলাইনে যে পণ্য বিক্রয় করেছে, তার বিপরীতে প্রযোজ্য ৫ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৫ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেনি। যার ওপর ২ শতাংশ হারে প্রযোজ্য সুদ ২ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ২৪৬ টাকা। সুদসহ মোট ফাঁকি ৮ কোটি ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩০১ টাকা। এছাড়া ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত পণ্য ও সেবার ওপর উৎসে মূসক কর্তন ও জমাদানের জন্য বিলম্বজনিত সুদ ১১ লাখ ১৮ হাজার ৯৪৭ টাকা। প্রতিষ্ঠানের সেবা ক্রয়, পণ্য বিক্রি ও উৎসে মূসক কর্তনের বিলম্বজনিত সুদসহ মোট ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৪৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫ হাজার ৬৭৯ টাকা। এই ভ্যাট পরিশোধ না করে দারাজ ফাঁকি দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদল হকের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে ভ্যাট ফাঁকি ও মামলার বিষয়ে বক্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে দারাজের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পিআর টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। দারাজের জনসংযোগ ব্যবস্থাপক সায়ন্তনী তৃশা কনসালট্যান্সি ফার্ম জিয়া অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। মামলার অগ্রগতি বিষয়ে জিয়া অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের হেড অব চেম্বার মো. জিয়াউর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘করোনার কারণে জবাব দিতে সময় নিয়েছি। আমরা জবাব লিখতেছি।’

সূত্রমতে, দারাজের বিরুদ্ধে দাখিলপত্র বা ভ্যাট রিটার্ন মূসক আরোপযোগ্য সেবা মূল্য প্রদর্শন না করে পরিকল্পিতভাবে ভ্যাট ও উৎসে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে একইসঙ্গে দুটি মামলা করে ভ্যাট উত্তর কমিশনারেট। এর মধ্যে একটি মামলায় সুদসহ প্রায় ৭২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ও অপর মামলায় প্রায় ৪৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি রয়েছে। দুটি মামলায় প্রতিষ্ঠানকে ১৫ দিনের সময় দিয়ে চলতি বছরের ৩১ মার্চ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর দাবিনামা সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়।

ভ্যাট উত্তর কমিশনারেটের একজন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, দাবিনামা সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিস জারির পর প্রতিষ্ঠান লিখিত জবাব দিতে সময় আবেদন করে। পরে তাদের সময় দেয়া হয়েছে। এখনও জবাব দেয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা প্রথম থেকেই ভ্যাট অফিসকে তেমন সহযোগিতা করেনি। এখনও লিখিত জবাব দেয়নি। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা দারাজ অনলাইনভিত্তিক মার্কেটপ্লেস, যাদের ভ্যাট হবে না বলে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি আরও ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে কিনাÑতা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ভ্যাট ফাঁকি রোধে প্রতিষ্ঠানকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দারাজ চীনা মালিকানাধীন একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস, যেটি দক্ষিণ এশিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এটি ২০১২ সালে জার্মান কোম্পানি রকেট ইন্টারনেটের মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে ‘দারাজ বাংলাদেশ’ নামে বাংলাদেশে দারাজের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা ই-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ‘কেইমু’ দারাজের সঙ্গে একীভূত হয়। ২০১৮ সালের ৯ মে আন্তর্জাতিক দারাজ গ্রুপকে চীনা বহুজাতিক কোম্পানি ও ই-বাণিজ্য জায়ান্ট আলিবাবা গ্রুপ কিনে নেয়। আলিবাবা গ্রুপ নিয়ন্ত্রণাধীন দারাজ বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, হংকংসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দারাজ, শপ ও লাজাডা নামে ই-বাণিজ্য সেবা দিয়ে থাকে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com