২৪ ঘন্টায় দুইটি প্রাদেশিক রাজধানী দখলের পর এখন সরকারি বাহিনীর তীব্র হামলার মুখে পড়েছে তালেবান। এরমধ্যে রোববার শেবেরগান শহরে তালেবানের অবস্থান লক্ষ্য করে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে আফগান বিমান বাহিনী। সেখানে নিহত হয়েছে ২ শতাধিক তালেবান সদস্য।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে। এছাড়া আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ফাওয়াদ আমানও এক টুইট বার্তায় নিহতের সংখ্যা ২০০ জনের বেশি বলে জানিয়েছেন। ওই টুইটে তিনি লিখেন, আফগান বিমান বাহিনী শেবেরগান শহরে তালেবানের অবস্থান ও আস্তানা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ২ শতাধিক সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ধ্বংস হয়েছে তাদের ব্যাপক অস্ত্র ও যুদ্ধযান।
আমি গরুর ব্যবসা করতে যাবো কেন!
তালেবানের ওপর এই হামলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বি-৫২ বোম্বার যুদ্ধবিমান। এর একদিন আগেই জাওজান প্রদেশের রাজধানী শেবেরগান দখল করেছিল মিলিশিয়া বাহিনীটি। তবে একদিনের মাথায়ই সরকারি বাহিনীর বড় প্রতিরোধের মুখে পড়তে হলো তাদের। আফগান সরকারের পক্ষে ওই হামলা চালিয়েছে মার্কিন বিমানবাহিনী।
এর আগে এক পাকিস্তানি সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে আফগান কমান্ডো বাহিনী। রোববার গজনী শহরের কাছ থেকে ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক ওই ব্যাক্তি সাধারণ আফগান নাগরিকদের হত্যা এবং সন্ত্রাসবাদে জড়িত ছিল বলে জানানো হয়েছে। এই মাসের মধ্যেই সকল মার্কিন সেনার আফগানিস্তান ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এর আগে মার্কিন বাহিনী আফগান বাহিনীকে সহায়তা করে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন বাহিনী। শনিবার আফগানিস্তানের লস্করগর শহরে সন্ত্রাসীদের একটি অবস্থান টার্গেট করে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে ৩০ পাকিস্তানি সন্ত্রাসী ও আল-কায়দা সদস্য নিহত হয়। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। কুন্দুজ প্রদেশেও তালেবানের অবস্থান লক্ষ্য করে বড় ধরণের বিমান হামলা চালিয়েছে আফগান বিমান বাহিনী। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে ৩৮৫ তালেবান সদস্য নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২১০ জন। একদিনে তালেবানের ওপরে হামলা হয়েছে, নানগারহার, লোগার, গজনী, পাকটিকা, ময়দান ওয়ারডাক, কান্দাহার, হেরাত, ফারাহ, জোজান, সামানগান, হেলমান্দ, তাখার, বাঘলান ও কাপিসা প্রদেশে হামলা হয়েছে।
তালেবানের হাতে পতন হওয়া শেবেরগান পুনরায় দখলে স্থলপথেও অভিযান শুরু করেছে আফগান বাহিনী। এরইমধ্যে সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৫০ সদস্যকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আগে থেকে থাকা সেনা সদস্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করবেন তারা। তালেবান আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার পর দেশটির সরকারি বাহিনীর প্রতি মানুষের সমর্থন আবারও বাড়তে শুরু করেছে। দেশটির নানগরহর প্রদেশে ধর্মীয় নেতারা তালেবানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা আহত আফগান সেনাদের জন্য রক্ত দান করে সংহতি প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে আজীবন আফগান বাহিনীকে সমর্থন দিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দেন।