বরিশালের ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের এন্টিবায়োটিক উৎপাদন ও বিক্রি নিয়ে এক রায় অমান্য করায় স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাসার মো. খুরশীদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বাকি তিনজন হলেন-ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) বাবলু কুমার শাহা, ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান এবং ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের (এএফএম) এমডি আনোয়ারুল হক।
এন্টিবায়োটিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’ (জিএমপি) নীতি অনুসরণ এবং জিএমপি অনুসরণের সক্ষমতা অর্জনের ভিত্তিতে অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনের অনুমোদন সংক্রান্ত রায় অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভযোগ আনা হবে না তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এন্টিবায়োটিকের উৎপাদন চালিয়ে গেলেও ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বা অন্যান্যরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জিএমপি অনুসরণ না করে এন্টিবায়োটিক উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধে ২০১৬ সাল মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাই কোর্টে জনস্বার্থে মামলা করে।
ওই মামলার শুনানি শেষে আদালত ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট ইন্দো বাংলা ফর্মাসিউটিক্যালসসহ ২০টি ওষুধ কোম্পানির মানহীন ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পাশাপাশি ১৪টি কোম্পানিকে এন্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
সেই সঙ্গে ৩৪টি কোম্পানির অনুমোদন বাতিলে ‘বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এসব কোম্পানির লাইসেন্স ও এন্টিবায়োটিক উৎপাদনের অনুমোদন কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়।
চার কোম্পানি এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলেও হাইকোর্টের আদেশই বহাল থাকে।
পরবর্তীতে রুল শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত রায় দেন। রায়ে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ‘ব্যর্থ’ ২০ কোম্পানির সব ওষুধ এবং ১৪টি কোম্পানির এন্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।