জনস্বার্থ রক্ষা জাতীয় কমিটি আহবায়ক ও বাংলাদেশ মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন- যে বিদেশী চ্যানেলগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা দীর্ঘদীন মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম । সে চ্যানেলগুলো আজ তথ্য মন্ত্রণালয় বন্ধ করায় মাননীয় মন্ত্রী সত্যি আজ প্রশংসার দাবিদার। কারণ আপনারা সবাই জানেন জি বাংলা, স্টার জলসা, স্টার প্লাসসহ বিদেশী চ্যানেলগুলো সিরিয়াল নির্ভর অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। একটু খেয়াল করলে দেখতে পাই এরা প্রতিটি সিরিয়ালে নারী প্রধান চরিত্র চিত্রায়িত করে থাকে। পুরুষ চরিত্রগুলো সহায়ক হয়ে থাকে। এই চ্যানেলগুলোর উদ্দেশ্য নারী দর্শকদের তাদের সিরিয়াল দেখতে বাধ্য করা। বানিজ্যিক উদ্দেশ্য তাদের অন্যতম লক্ষ্য। আমরা সচেতনভাবে এই অবক্ষয়ের শিকার হতে পারি না। কিছু কুফল নিচে তুলে ধরা হলো।
সংসারের কর্ত্রী সিরিয়াল দ্বারা এতোই প্রভাবিত হয়ে থাকেন যে, সব কাজ পড়ে থাকুক কিন্তু সিরিয়াল দেখা মিস করা যাবে না। এতোটাই নেশাগ্রস্থ থাকেন যে, স্বামীর সাথে কলহ করতে তাদের যুক্তির অভাব হয় না।
সন্তানদের লেখাপড়ার খোঁজ রাখার মত বিষয়ে উদাসীন হয়ে থাকে। মাতৃস্নেহ থেকে শিশুরা বঞ্চিত হয়ে থাকে। শিক্ষিত মা সন্তানদের লেখাপড়ার কোন ভুমিকা রাখতে পারে না। গৃহশিক্ষকের উপর সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব দিয়ে তারা নিশ্চিত। শিশুরা মায়ের স্নেহ-মমতার বদলে শাসন ও নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে।
মেয়েরা পড়ালেখা ভূলে অনৈতিক শিক্ষা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নানা রকম অবাধ্যতা দেখায়। যা পরিবারের জন্য ভয়ের কারন হয়ে যায়।
সিরিয়ালে পুরুষ নারীর বাধ্য থাকে সাধারণত। ফলে নারীর ক্ষমতা সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে এদেশের বিবাহিত নারীরা উপলব্ধিতে আনতে পারে না। তাদের অনেকেই পরোকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। সিরিয়ালের কারণে পরিবারের রান্না-বান্না, শিশুদের স্কুলে নেয়া ইত্যাদি বাড়ির কাজের মেয়ের উপর ন্যাস্ত থাকে। এতেও শিশুদের মানুসিক বিকাশ ভীষণভাবে বাধা গ্রস্থ হয়। শিশুরা বুয়ার আচরনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। যা খুবই স্পর্শকাতর।
সিরিয়াল কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে বিরুপ প্রভাব ফেলে। যৌণজীবন সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তাদের মনে আসন করে নেয়। অনেকই পর্নগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় অবাধ্য আচরণে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।
ভারতীয় চ্যানেলের প্রতি টিভি দর্শকরা এতোটাই মোহগ্রস্থ যে দেশীয় টিভি অনুষ্ঠান দেখার রুচিই তাদের নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে আমাদের টিভি নির্মাতারা পর্যাপ্ত বাজেটের অভাবে ভাল কিছু করতে পারছেন না। টিভিগুলোা বিদেশী সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং করে বিজাতীয় সংস্কৃতি দেশী টিভিতে চালাচ্ছে। ফলে দেশীয় সংস্কৃতি দুর্দিনে পড়েছে। ভারতীয় সিরিয়ালের কারণে বাংলাদেশে আত্মহত্যার মত ঘটনাও ঘটেছে যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে।
আমাদের পরিবার ও সামাজিক জীবনে আকাশ সংস্কৃতি অসুখ বাধিয়ে দিয়েছে। আমরা গভীর ভাবে উপলব্ধি করছি। এই অসুখ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই ভারতীয় চ্যানেল বিশেষ করে জি বাংলা, স্টার জলসা, স্টার প্লাস সহ অন্যান্য চ্যানেলগুলো যাতে অদূর ভবিষ্যতে না চলে তার প্রতি অনুরোধ রইল।