1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেপ্তার বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত ড. ইউনূসের স্বজনপ্রীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা : হাসনাত আবদুল্লাহ আল-জাজিরার অনুসন্ধান শেখ হাসিনার শাসনের শেষ মুহূর্তের ভয়ংকর চিত্র ফাঁস দীর্ঘ অপেক্ষায় স্বজনরা সংকটাপন্ন আটজন পর্যবেক্ষণ সিঙ্গাপুর প্রতিনিধিদলের অনড় অবস্থানে ওয়াশিংটন আপাতত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরছে না ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে কমানো হবে বাণিজ্য ঘাটতি। মূল নেগোসিয়েশন হবে নন ডিসক্লোজার চুক্তির মাধ্যমে। আলোচনায় স্থান পাবে টিকফা ও জিএসপি প্লাস ইস্যুও গতিহীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ► ১৮ মাস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্বে কাজ বন্ধ ছিল ► ছিল অর্থ সংকটও Bangladesh Bank withdraws dress code instruction” ISPR debunks rumors over death toll in Milestone school jet crash Ex-Chief Justice ABM Khairul Haque detained

চার কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১
  • ১৩৬ বার দেখা হয়েছে

গত তিন মাসে তেল, চাল, চিনি, আটা, ময়দা, ডাল, ডিম, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্যের দাম অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে। এতে দিশেহারা নিম্ন আয়ের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও। প্রথমে তেমন তৎপর না হলেও সম্প্রতি দাম বৃদ্ধির নিয়ে কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

যার মধ্যে তেল, চাল, চিনি ও পেঁয়াজসহ আমদানিকৃত খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার ও হ্রাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে।

কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মূলত চারটি কারণে দেশে দফায় দফায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এর মধ্যে ভোজ্যতেল, চিনি, চাল ও ডালসহ আমদানিকৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে তিনটি কারণ।

প্রথমত, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি; দ্বিতীয়ত, জ্বালানি তেল ও পরিবহন সংকটে ফ্রেইট কয়েকগুণ বৃদ্ধি এবং টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধি।

অন্যদিকে, দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের কারসাজিকে দায়ী করেছেন খোদ সরকারি মহল।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবেই গত এক মাসে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আমদানিকারকরা এই নিত্যপণ্যটির দাম বৃদ্ধির জন্য দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হওয়ায় আমদানি নির্ভরতাকে দায়ী করছেন।

কমিশন এজেন্ট মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ভারতের রপ্তানিকারকরা যে বাজার নির্ধারণ করে, সেই বাজারটাই বাংলাদেশে নির্ধারণ হয়।

তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, ভিন্ন কথা। তাদের মতে, গত জুন পর্যন্ত এক বছরে পেঁয়াজের ৩৫ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় সাড়ে ৩৩ লাখ মেট্টিক টন। যা আগের বছরের চেয়ে ৮ লাখ টন বেশি।

সংরক্ষণ দুর্বলতায় সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ নষ্ট ধরলেও টিকে যায় ২৫ লাখ টনের বেশি। সেক্ষেত্রে আমদানি করতে হচ্ছে ১০ লাখ টন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আমদানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু ঘাটতি দেখিয়ে ফায়দা লুটতে চায় বিশেষ একটি শ্রেণি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইআইটি অণুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। যারা ঘাটতি বলে তারা আসলে ব্যবসা করতে চায়।

জানা গেছে, দেশে প্রতিমাসে পেঁয়াজের চাহিদা দুই লাখ টনের কিছু বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ছয় লাখ পাঁচ হাজার ১২৪ টন। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭০ টন। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজ ৯টি জেলায় মজুত আছে ৪ লাখ ২১ হাজার ৪২৪ টন। সব মিলে সরকারের হাতে এখনো ৬ লাখ ৫১২৪ টন মজুত আছে। যা দিয়ে আগামী তিন মাস চলবে। পাশাপাশি নভেম্বরে কৃষকের নতুন পেঁয়াজ আসবে বাজারে।

এছাড়া আর্ন্তজাতিক বাজার থেকে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পেঁয়াজের বাজারে সরবরাহ ও আমদানি স্বাভাবিক আছে। এরপরও দাম বাড়ছে।

একইভাবে, দেশে গত দুই থেকে তিন মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। তিন মাস আগে যেখানে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১২০ টাকা, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম বর্তমানে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। যা ওই সময় ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হতো।

অন্যদিকে, ৯০-৯৫ টাকা ডজনের ডিম বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। অর্থাৎ, প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫-৩০ টাকা। আর হালিতে বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা।

খামারিরা মুরগির মাংস এবং ডিমের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে ব্রয়লার ফিড সয়াবিন সিড রপ্তানিকে দায়ী করেছেন।

তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মাংস ও ডিম উৎপাদকদের দাবির কিছুটা যৌক্তিকতা থাকলেও যে হারে দাম বেড়েছে তা কোনোভাবেই সংগতিপূর্ণ না।

এদিকে, তেল, চিনি, ডাল ও আটা-ময়দার দাম বৃদ্ধির জন্য তিনটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে এসব পণ্যের সঙ্কটের কারণে দাম বৃদ্ধি এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও কন্টেইনার সঙ্কটের কারণে ফ্রেইট কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হয়ে উঠায় আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ছে।

একারণে, শিগগিরই এসব পণ্যের দাম কমার তেমন সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) এর উইং প্রধান, অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘ভোজ্যতেল ৯৫ শতাংশ, চিনি ৯৮ শতাংশ এবং ডালও প্রায় ৭০ শতাংশ আমদানিনির্ভর। এসব পণ্য যেহেতু আমদানিনির্ভর সেকারণে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারেও বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’

তিনি জানান, এই তিনটি পণ্য যেসব দেশ থেকে আমদানি করা হয় সেসব দেশে করোনা ভয়াবহ আকারে হানা দেওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে এর বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে।

তিনি দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আরো বলেন, ‘আমরা ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা থেকে চিনি এবং ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে ভোজ্যতেল আমদানি করে থাকি। কিন্তু এসব দেশে করোনা ভয়াবহ হানা দিয়েছে।

তাছাড়া, এসব পণ্যের সোর্সিং কান্ট্রিও বেশি না। অন্যদিকে, পরিবহন পণ্য খরচ (ফ্রেইট) বেড়েছে প্রায় ৩৬০ শতাংশ। ফলে দেশে এসব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হচ্ছে না।’

শফিকুজ্জামানের মতে, গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি এবং মসুর ডালের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশে তেমন বাড়েনি।

আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম কমার শিগগিরই কোনো সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম দ্রুত কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। তাই সামনের দিকে কোনো ভালো খবর দেওয়ার নেই। এরকম আরো ২ থেকে ৩ মাস চলতে পারে।’

আমদানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ফ্রেইড ফরোয়ার্ড কোম্পানির মধ্যে ম্যারস্ক বাংলাদেশ লিমিটেড এর কন্টেইনার সবচেয়ে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গত ৩ মাস ধরে তারা কন্টেইনার সাপোর্ট অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কি কারণে করেছে তাও তারা বলছে না।

আন্তর্জাতিক ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং এই কোম্পানির দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলের অফিস ভারতের পুণেতে। সেখানে কর্মরত ভারতীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশে কন্টেইনার সেবা বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলছেন না।

ইউনিফাইড লজিস্টিকস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ অপারেশন কর্মকর্তা গোলাম রাব্বি মোরতুজা বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কেন তারা আমাদের দেশে সার্ভিস বন্ধ করেছে তা নিয়ে মুখ খুলছেন না।

সেখানকার একজন মার্কেটিং কর্মকর্তা চিরঞ্জীব জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে কিছু কন্টেইনার তারা ছাড়ার কথা জানিয়েছে, যেগুলো শুধুমাত্র তাদের জন্য যাদের সাথে তাদের কন্ট্রাক্ট রয়েছে।’

খাদ্যপণ্য বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য। কিন্তু ম্যারস্ক তাদের কোনো কন্টেইনার দিচ্ছেনা বললেই চলে।

গোলাম রাব্বি জানান, আগে যেখানে ৮০০ বা ৯০০ ডলারে বাহরাইনের এক কন্টেইনার পণ্য পাঠাতে পারতাম, এখন সেই কন্টেইনার ৩ হাজার ডলারেও মিলছে না।

এছাড়া, লন্ডনে এক কন্টেইনারে এক কন্টেইনার মাল পাঠাতাম ৩ থেকে ৪ হাজার ডলারে। আর এখন সেই ফ্রেইডটা দাড়িয়েছে ১৫ হাজার ডলারে অর্থাৎ, প্রায় ৫ গুণ।

এদিকে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, বিশ্বজুড়ে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, প্রায় এক যুগের মধ্যে মাস হিসেবে মে মাসে হিসেবে সর্বোচ্চ বেড়েছে খাদ্যের দাম।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যে দেখা গেছে, গত এক বছর ধরেই বাড়ছে বিশ্বে খাদ্যের দাম। করোনা মহামারির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব পড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সংস্থাটি জানায়। একারণে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো।

বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি এবং খাদ্যের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সারা বিশ্বের শস্য, তেলবীজ, দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও চিনির দরের ওপর ভিত্তি করে খাদ্য মূল্যসূচক তৈরি করে এফএও।

গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মে মাসে খাদ্যের দাম ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০১০ সালের অক্টোবরের পর এক মাসে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের পর খাদ্য মূল্যসূচক এতটা কখনোই বাড়েনি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com