1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ

যে কারণে বহিষ্কার জাহাঙ্গীর

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১
  • ৩২৫ বার দেখা হয়েছে

শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। সেইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল শুক্রবার বিকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অডিও ও ভিডিও রেকর্ড ফাঁসের পর গাজীপুরে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে গত ৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরের কাছে ব্যাখ্যা চায় আওয়ামী লীগ। এতে তাকে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। ১৮ অক্টোবর সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মেয়র তার ব্যাখ্যা দেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, ‘এটা মিথ্যা, বানোয়াট। আমাকে ফাঁসানোর জন্য, ছোট করার জন্য এটা করা হয়েছে।’ বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় গতকাল তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় আওয়ামী লীগ।
এদিকে জাহাঙ্গীর আলম বহিষ্কারের মধ্যদিয়ে গাজীপুর আওয়ামী লীগ এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। তার মেয়র পদ কী আদৌ টিকবে- নাকি কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে কেউ এ দায়িত্ব পাবেন তা নিয়ে শুরু চলছে জল্পনা-কল্পনা। অবশ্য কাউকে প্যানেল মেয়র মনোনীত না করায় এ নিয়েও নানান মত রয়েছে। আবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি কে হবেন তাও রয়েছে আলোচনায়। মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্ব কে পাচ্ছেন তা নিয়েও আলোচনার কমতি নেই।
প্রসঙ্গত, গত ২২ সেপ্টেম্বর মেয়র জাহাঙ্গীরের একটি ঘরোয়া আলোচনার ৪ মিনিটের একটি রেকর্ড ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এর একটি অংশ ছিল ভিডিও, একটি অংশ ছিল অডিও। মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির ঘরোয়া আলোচনার ভিডিও ফেসবুকে ফাঁসের পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে কয়েক মাস ধরে সেখানে বিক্ষোভ করে ক্ষমতাসীন দলের একটি অংশ। চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, হেফাজতের প্রয়াত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে তার সখ্য ও রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়ে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করছেন মেয়র জাহাঙ্গীর। এই ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, মেয়র মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেন। নগরীর বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনও হয়েছে। ভিডিওটির শুরুতে মেয়র জাহাঙ্গীরকে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে শোনা যায়। তার দাবি, বঙ্গবন্ধু তার স্বার্থে এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তান ভাঙার পেছনে রাষ্ট্রপতি হওয়ার বাসনা কাজ করেছে বলেও মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। তার ধারণা, বাংলাদেশ স্বাধীন না হয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে থাকলে পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জাতি থাকত এখানকার মানুষ। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের প্রসঙ্গে টেনে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি রাসেল সাহেবকে এইখানে নিয়া ফালাইছি। আমি চাইছি রাসেল সাহেব ভুল করুক। আমি ইচ্ছা করেই চাইছি হেও মিছিলটাতে এটেন্ড করুক।’ গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজমত উল্লাহ আমারে জীবনে মারার লাইগা লোক কন্টাক্ট করছে, সব করছে। এখন সে আমার কর্মী হইছে। …আমারে জিগায় কী করছ? আমারে কয়দিন জিগাইছে কী করো, কেমনে সম্ভব? হেও সব জানে না! আমি তো খেলা জিতছি।’ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি মন্ত্রীরে নিয়া মাথা ঘামাই না। জাহিদ আহসান রাসেল আছে না? তারে নিয়া আমি এক মিনিটও চিন্তা করি না। খালি জাস্ট শুইনা রাখো, বিশ্বাস করার দরকার নাই। আমি চিন্তা করলাম সে তো মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠই। দরকারটা কী আমার এখানে, পরিবর্তনে কী হইব? এখানে পরিবর্তনের লাভটা কার?’ গত তিন বছরেও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে প্যানেল মেয়র নির্বাচন করা হয়নি। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও চলছে। এ বিষয়ে ভিডিওটিতে মেয়রকে বলতে শোনা যায়, ‘প্যানেল মেয়র দেই না। দিলে কী হইব? আমারে কি কাউন্সিলররা মেয়র বানাইছে? আমার কি মেয়রগিরি যাইবগা? যেমন আমি এখানে প্যানেল মেয়র করি নাই। রাসেল এমপি অনেকরে মেয়র বানাইয়া দিতেছে, অনেকরে কাউন্সিলর বানাইয়া দিতেছে। প্রধানমন্ত্রী আরেকজনরে ভারপ্রাপ্ত দিব?’ বাংলাদেশের দুটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্তাব্যক্তি তার নিকটাত্মীয় উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বাতাসটা আমার কাছে বইলা যায়।’ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এমনকি হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার কথাও বলেন মেয়র জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, ‘আমি জামায়াতের সাথে চলি না? বিএনপির সাথে চলি না? অন্য পার্টি আছে না সবার সাথেই তো কথা বলি। এই যে আমার সাথে ঘণ্টা তিনেক আগেও বাবুনগরী (হেফাজতের প্রয়াত আমির) প্রায় ৪৭ মিনিট কথা বলছে। সে আসতে চায়। আমি কথা বলছি না? ‘ধীরাশ্রম, ঝাঝর, চান্দরা আছে ৮/১০ বিঘা, দিঘিরচালা আছে ১৬ বিঘা, তেলিপাড়াও আছে। আমার এখানে সাড়ে তিন’শ বিঘা জমি আছে। এই নির্বাচনের সময়েও দশ হাজার কোটি টাকা আনছি।’ অবশ্য শুরু থেকেই মেয়র দাবি করে আসছেন, ভিডিও কারসাজি করা। যেসব কথা শোনা যাচ্ছে, সেগুলো সুপার এডিট করা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির প্রথম দিকে মেয়র জাহাঙ্গীরকে নীল রঙের জামা পরে চেয়ারে বসে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওটির প্রথম দিকে মেয়রকে দেখা গেলে বাকি অংশে শুধু অডিও বক্তব্য শোনা যায়। কিছু কিছু অংশ ছিল অস্পষ্ট। ভিডিওটি কে বা কারা কবে ধারণ করেছেন, সেটি জানা যায়নি। কারাই বা সেটি ফেসবুকে ছেড়েছে, সেটিও অজানা।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com