1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

মহান ভাষার মাস বাঙালির একুশে আর নতুন বইয়ের উৎসব

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২০৪ বার দেখা হয়েছে

হরিপদ দত্ত

স্বাধীনতার জন্য মার্চ এবং ডিসেম্বর যেমনি বাঙালির জোছনাকাল, ঠিক তেমনি ফেব্রুয়ারি ও ভাষা আর সাহিত্যের রৌদ্রস্নাত তিথি। এই ফেব্রুয়ারিতে জন্ম নেয় নতুন কবি-লেখক।

এ কেবল বইয়ের জন্ম তিথি নয়, বাঙালির নতুন চিন্তা আর শিল্প উদ্ভাবনের শুভদিন। নাম তার একুশের বইমেলা। কাকতালীয়ভাবে ১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই সাহিত্যখ্যাতির জন্য তার জীবনের সবচেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করে মধুসূদন দত্ত স্বধর্ম ছেড়ে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

কেবলমাত্র সাহিত্য সৃষ্টির প্রত্যাশায় এত বড় ত্যাগ দ্বিতীয়টি নেই বাঙালির। ধর্মত্যাগী সন্তানের প্রতি পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ক্ষুব্ধ হয়ে মধুসূদনের গর্ভধারিণী জাহ্নবী দেবীর অনুমতি ছাড়াই পরপর আরও তিনটি বিয়ে করেন। কোনো নারীই তাকে পুত্রসন্তান কেন, কোনো সন্তানই দিতে পারেনি। মাত্র আঠারো বছর বয়সে যে মধুসূদন মাইকেল হয়ে গেলেন তিনি তার স্বপ্ন পূর্ণতার ব্যর্থতার ভেতর কী পেলেন তার হিসাব বড় জটিল। মাইকেল তার ইচ্ছা পূরণ করতে না পারলেও বাঙালি তার কাছ থেকেই পেয়েছে আধুনিকতা এবং মহাকাব্য আর সনেট। মাইকেল দেখিয়েছেন সাহিত্যের জন্য তার জেদের কাছে হার মেনেছে তার পৈত্রিক ধর্ম।

আপন ধর্মের ওপর সাহিত্যকে স্থান দিয়ে কী পেয়েছিলেন নিজে তার জানার কথা ছিল না। ছিল বাঙালির। মাইকেলের ধর্মত্যাগের ফেব্রুয়ারি মাস তাই বাঙালি ও বাঙালির সাহিত্যের এক বিস্ময়কর মাস।

তাই ফেব্রুয়ারি মাস বাঙালিকে শিখিয়েছে সাহিত্যের মহান সৃষ্টির জন্য আরও কত ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। ফেব্রুয়ারির গর্ভভূমি ছেড়েই বাংলায় জন্ম নেয় বসন্ত ঋতু। প্রকৃতি বাঙালিকে ভাবুক বানায়, তার সৃষ্টিশীলতায় নতুন জন্মের আহ্বান আসে। প্রকৃতি মুগ্ধতার ভেতর সৃষ্টি হয় কাব্য, সংগীত, নানা ভাবনা। সেই কবে চর্য্যাপদের কাল পেরিয়ে গেছে। চর্য্যার সংসার ত্যাগী সিদ্ধাচার্যরাও বসন্তের মায়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারেননি। ধর্মের জটাজালকে ডিঙিয়ে সৃষ্টি হয় কাব্য। বসন্তের আঁতুড় ঘরে (৮ ফাগ্লুন) যে জন্ম রক্ত থিকথিক করে নবজাতক পৃথিবীতে আসে, তাকে সাক্ষী রেখেই মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত ঢেলে দেয় বঙ্গ সন্তানেরা। সময় ও জীবনের কি আশ্চর্য আখ্যান কাব্য! সেই কবেকার বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি। পাহাড়ি ঝরনার চেয়েও গতিময়। একুশের স্মৃতি নিয়ে ভাষা পাগল বাঙালি বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে।

ফেব্রুয়ারি মাসে দত্তকুলের মধুসূদন ‘মাইকেল’ হয়ে কী প্রমাণ রেখে গেলেন বাঙালি সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য তা অবশ্যই বড় ভাবনার বিষয়। ‘মহাকবি’ হওয়ার মোহাছন্নতা নিয়ে আধুনিক মুক্তিবাদী মনে প্রশ্ন উঠতে পারে। এটাও সত্য মানুষের ত্যাগ বা আত্মত্যাগের ‘ইতিহাস বড় দীর্ঘ’। খ্যাতির জন্য ত্যাগ, অর্থ লাভের জন্য ত্যাগ, প্রেমের জন্য ত্যাগ, দেশ, ভক্তির জন্য ত্যাগ, মরার পর স্বর্গ লাভের জন্য ত্যাগ, যতই তার পরমপরা এক না হোক, মানুষকে এসবই জড়িয়ে থাকে। বাঙালির ভাষার মাস, একুশের আবেগ আজ বিশ্ব বাস্তবতার সঙ্গে গভীর দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। জীবন বাস্তবতা, রাষ্ট্র বাস্তবতা, আন্তর্জাতিক বাস্তবতা ‘মাতৃভাষা’ প্রশ্নে যেন গোলক ধাঁধার না পড়ে তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে বাঙালিকে।

দেশ, কাল, জীবন বাস্তবতা, রাষ্ট্র বাস্তবতা পরস্পর দ্বান্দ্বিক। বাণিজ্য কোনো নিন্দার বিষয় নয়। ভোগ্যপণ্যের বাইরে মনে পিপাসার বইও যে বিনিয়োগ আর মুনাফার বিষয় বাঙালি তা আবিষ্কার করে একুশের বইমেলায়। বাঙালি চেতনার এই বিবর্তন সত্যি বিস্ময়ের। পড়ার সময় কমে গেলেও শত সমস্যায় জড়িয়ে পড়া বাঙালি বই কিনতে একুশের মেলায় যায়। মেলা বিষয়টা বিনোদনের হলে এই বিনোদনে দার্শনিকতা আছে। কেননা বই সুস্বাদু কোনো খাদ্য নয়। তবে বই মন-মনন-মগজ-বোধ বুদ্ধির চিন্তাস্বরূপ খাদ্য। বাঙালি যে ‘আধুনিক মানুষ’ হয়ে উঠছে তার প্রমাণ বইমেলার ভিড় ঢাকার বইমেলা বিশ্বকাপের না হলেও মাত্র একটি ভাষায় (বাংলা) একসঙ্গে এত বইয়ের জন্ম বাঙালির কীর্তি। প্রযুক্তি বা যন্ত্র সভ্যতার যতই দাপট বাড়ুক (ই-বুক) টেবিলে ফেলে পাতা উলটে বই পড়ার অভ্যাস বাঙালিরা ভুলে যাবে, তা কোনো দিন হওয়ার নয়। নোবেল পাওয়া বাঙালি রবীন্দ্রনাথ নিজ হাতে নিজের লেখা বই বিক্রি করে খুচরা পয়সাটা ক্রেতার হাতে তুলে দিতেন। ক্রেতাকে আগাম জানিয়েও দিতেন পরবর্তীতে তার কোন বই বাজারে আসছে। তাই বলি একুশ আসবে ঘুরে ঘুরে, ভাষা বিদ্রোহের স্মৃতির পথ ধরে বাঙালির ‘বই নবজাতকের’ আগমন শব্দও বাতাসে ছড়াবে। হয়তো কারও কারও মনে পড়বে মধুকবির সাহিত্যের জন্য পিতৃধর্ম পরিত্যাগের আখ্যান। এরই নাম বই আর বইমেলা।

অনুলিখন : শুচি সৈয়দ

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com