1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

হে বীর হে নির্ভয় তোমারই হলো জয়

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩
  • ৭০ বার দেখা হয়েছে

আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন

বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, ‘পোয়েট অব পলিটিকস— রাজনীতির কবি’ খ্যাত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একজন ব্যক্তিই নন, তিনি একটি সত্তা, একটি প্রাণ, একটি শক্তি। এই সত্তা পৃথিবীর অস্তিত্বের মতোই সত্য, এ প্রাণ সৃষ্টিতত্ত্বের মতোই শাশ্বত, এই শক্তি জ্বলন্ত সূর্যের মতোই শক্তিমান। পাকিস্তানের শাসন, শোষণ, অত্যাচার ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সারাটা জীবন তিনি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। এই মা-মাটি ও মানুষের মঙ্গলের জন্য মাত্র ৫৫ বছরের জীবদ্দশায় ৪ হাজার ৬৮২ দিন জেল খেটেছেন, অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুম ভোগ করেছেন। এমন মহান নেতা কজন আছে এই ধূলিধরায়?

 

কুচক্রী ষড়যন্ত্রকারী পশ্চিম পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নামে ২৫ মার্চ ঘুমন্ত, নিরস্ত্র, নিরাপরাধ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শুরু করে নির্বিচারে নির্মম হত্যাযজ্ঞ। আর সেই রাতেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়ি থেকে রাত ১টা ৩০ মিনিটে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় বাঙালির প্রাণের নেতা, বাঙালির অভিভাবক, স্বাধীনতার সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাকে গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার বাসভবন যেমন তছনছ করা হয়, তেমনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গ্রামের বাড়িটিও রেহাই পায়নি ঘাতকদের ধ্বংসলীলা থেকে। ১৯৭২ সালের ১৮ জানুয়ারি নিউ ইয়র্ক টেলিভিশনের ‘ডেভিড ফ্রস্ট প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ডেভিড ফ্রস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি উঠে আসে। বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে ধানমন্ডি বাসভবন থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং তা ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও নির্দেশিত পথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালিয়ে যান।

বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর প্রথমে ঢাকার আদমজী স্কুলে এবং পরে ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউজে আটক রাখা হয়। ২৬ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া এক ভাষণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করে। ঢাকায় গ্রেফতারের তিন দিন পর অর্থাৎ ২৯ মার্চ তাকে বিমানযোগে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার কাছে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্দি’। এজন্য তাকে অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানে প্রেরণের বিষয়েও তারা কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে। সামরিক জান্তার আতঙ্ক ছিল, বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী প্লেনকে হয়তো কোনো বিদেশি রাষ্ট্র আকাশপথে যাওয়ার সময় ধাওয়া করতে পারে। পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুকে পাঞ্জাবের লায়ালপুর (বর্তমানে ফয়সালাবাদ) জেলে অপরিসর একটি কুঠুরিতে বন্দি করে রাখা হয়েছিল এবং পরবর্তী সময়ে মিয়ানওয়ালি জেলে।

পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্য ছিল, শেখ মুজিবকে ভয় দেখিয়ে আপস করতে বাধ্য করা এবং তার মুক্তির বিনিময়ে বাংলাদেশের অন্য নেতৃবৃন্দকে মীমাংসায় আসতে চাপ দেওয়া। এতে সমঝোতা না হলে প্রহসনের বিচারের নামে বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেওয়া। বিশ্বব্যাপী এই বিচার প্রহসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ওঠে। পাকিস্তান সরকার নিজেই উদ্যোগী হয়ে তার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয় এ কে ব্রোহিকে। ‘রায় নির্ধারিত’ হওয়ার বিষয়টি বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরে কর্তৃপক্ষকে বললেন, ‘আমার লাশটা বাংলার মানুষের কাছে পাঠিয়ে দিয়ো’। আদালতের কাজ শেষ হয় ৩ ডিসেম্বর এবং আদালত সর্বসম্মতভাবে ৪ ডিসেম্বর (কেবল পিতার মৃত্যুর কারণে অনুপস্থিত একমাত্র বেসামরিক সদস্য ব্যতীত) শেখ মুজিবকে আনীত সব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করে। এই রায় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের অনুমোদন সাপেক্ষ ছিল। এমনকি বঙ্গবন্ধুকে মানসিক চাপে ফেলার জন্য জেলখানার সেলের পাশে কবরও খোঁড়া হয়েছিল। এক পর্যায়ে ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবের ফাঁসির আদেশ কার্যকরের আদেশ দেয়। কিন্তু ইতিমধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে তার অনুগত বাহিনীর আত্মসমর্পণের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেলে তার প্রভাব পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানে। আত্মসমর্পণের উত্তেজনা আর দৌড়ঝাঁপের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয় না। এই সুযোগে ঐ জেলখানার জেলার বঙ্গবন্ধুকে জেলখানা থেকে সরিয়ে নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। পরে সেখান থেকে তাকে একটা আবাসিক কলোনিতে সরিয়ে নিয়ে যায়।

দীর্ঘ ৯ মাসের মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে বাঙালি জাতির বিজয়ের পর পাকিস্তানের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলি ভুট্টো বুঝতে পেরেছিলেন শেখ মুজিবের কিছু হলে বাংলাদেশে বন্দি পাকিস্তানি সৈন্য, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের অনুগতরা সেখান থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পারবে না। ভুট্টো ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাওয়ালপিন্ডিতে সাক্ষাৎ করলে বঙ্গবন্ধু তাকে বলেন, ‘আমি মুক্ত কি না বলুন।’ ভুট্টো বলেন, ‘আপনি মুক্ত, কিন্তু আমি আপনাকে যেতে দেওয়ার আগে কয়েক দিন সময় চাই।’ দীর্ঘ ৯ মাসাধিককাল পাকিস্তান জঙ্গিশাহির জিন্দাখানার অন্ধ প্রকোষ্ঠে নারকীয় বন্দি জীবনযাপনের পর অবশেষে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের নয়নের মণি, নিপীড়িত জনতার নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৮ জানুয়ারি মুক্তি পান এবং দেশে ফেরেন। বঙ্গবন্ধুকে বহন করা শ্বেতশুভ্র ব্রিটিশ রাজকীয় কমেট বিমানের ব্রিটিশ এয়ারলাইনসের পাইলট মি. কুক আবেগঘন কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি গত ১৭ বছর ধরে বিমান চালাই। প্রিন্স আলেকজান্ডার, এলিজাবেথ থেকে শুরু করে বহু বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিকে আমি আমার প্লেনে যাত্রী হিসেবে পেয়েছিলাম। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আমার যাত্রী হিসেবে পেয়ে আমি গৌরব বোধ করেছি।’ মি. কুক ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা দেখে থমকে যান। তার ভাষায়, ‘শেখ মুজিব ইজ আ গ্রেট ম্যান—শেখ মুজিব মহান মানুষ’।

লেখক : পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com