আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিন আসনে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা রিট আবেদন নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের শুনানিতে অনাস্থা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক বেঞ্চে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ শুনানি শুরু হলে অনাস্থা জানান তারা। পরে আদালত সোমবার পর্যন্ত ওই আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে তিনটি মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন বিএনপির নেতারা। সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে গত ২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন তিনটি (ফেনী-১. বগুড়া-৬ ও ৭) আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
পরবর্তীতে তাদের এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেন খালেদার আইনজীবীরা। আবেদনে নির্বাচনবিধি (১২)-১ এর ‘ঘ’ অনুসারে মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হয়।
হাইকোর্টে এক মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিলে ওই দণ্ড বাতিল বা স্থগিত হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত দেন।
প্রার্থিতা বাতিল করা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রিট দায়ের করা হয়। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা রিটের বিভক্ত আদেশের পর তা আবার শুনানির জন্য বুধবার নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
মনোনয়নপত্র বাতিল করায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার তিনটি আবেদনের শুনানির জন্য এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক বেঞ্চে এ সংক্রান্ত নথি পাঠানো হয়।
খালেদার বগুড়া-৬ আসনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেই প্রার্থী হয়েছেন। বগুড়া-৭ এ প্রার্থী করা হয়েছে মোরশেদ মিলটনকে। খালেদার পৈত্রিক এলাকা ফেনী-১ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে মুন্সী রফিকুল আলমকে।